কে আর দেখছে! বাঁকুড়ার মাচানতলায় বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
জেলার বিশেষ কয়েকটি জায়গায় প্রকাশ্যে তামাক দ্রব্য বেচাকেনা ও সেবনে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই সেই নিয়ম চালু হওয়ার কথা। কিন্তু আদৌ কেউ নিয়ম মানছেন কি না, প্রথম দিনেই তা নিয়ে কোনও তাপউত্তাপ দেখা গেল না প্রশাসনের। বিনা নজরদারিতে তামাক সেবন চলল প্রকাশ্যে। বিষয়টি নিয়ে জেলার বাসিন্দাদের অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।
স্বামীজির জন্মদিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার থেকে জেলায় প্রকাশ্যে মাদকদ্রব্য বিক্রি ও সেবনে নিষেধাজ্ঞা জারি হবে বলে ঘোষণা করেছিল জেলা প্রশাসন। সেই মোতাবেক এ দিন থেকেই জেলার সমস্ত সরকারি দফতর, হাসপাতাল চত্বর এবং স্কুল-কলেজের একশো মিটারের মধ্যে বিড়ি, সিগারেট, গুটখা, খৈনি বিক্রি ও সেবন করা নিষিদ্ধ। নিয়ম ভাঙলে দু’শো টাকা জরিমানাও হওয়ার কথা। ধাপে ধাপে এই নিয়ম জেলার অন্য প্রকাশ্য স্থানেও চালু হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার প্রচারে নেমে জেলা প্রশাসনিক ভবন ও কোর্ট চত্বরের দোকানদারদের সতর্ক করেন জেলার অ্যান্টি-টোবাকো টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান তথা অতিরিক্তি জেলাশাসক (জেলাপরিষদ) নবকুমার বর্মন। তবে এ দিন প্রশাসনের তরফে কোনও প্রতিনিধিকেই বাঁকুড়া শহরের কোথাও পরিদর্শনে যেতে দেখা যায়নি। নবকুমারবাবু অবশ্য বলেন, “বাঁকুড়া শহরে আমরা গত কয়েক দিনে একাধিকবার পথে নেমে দোকানদারদের সচেতন করেছি। এ দিন শহরে না হলেও জেলার বিভিন্ন ব্লক ও মহকুমা শাসকের দফতরের প্রতিনিধিরা নিজেদের এলাকায় পরিদর্শন চালিয়েছেন।”
ঘটনা হল, মঙ্গলবার থেকেই শহরের সরকারি অফিস, আদালত, হাসপাতাল এবং স্কুল-কলেজ সংলগ্ন এলাকার তামাকজাত নেশাসামগ্রী বিক্রেতাদের মধ্যে সতর্কতা দেখা গিয়েছে। প্রকাশ্যে কেউই গুমটিতে নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়া তামাকজাত নেশাসামগ্রী ঝুলিয়ে রাখছেন না। তবে অনেকেই লুকিয়ে সেগুলি বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠছে। তবে কেবল পরিচিত ক্রেতাদেরই তামাকজাত নেশাসামগ্রী বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। যে সমস্ত জায়গায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, সেখানে তামাক সেবনের ছবিটা অনেকটা কমলেও একেবারেই যে বন্ধ হয়ে গিয়েছে এমনটা নয়। নিষেধাজ্ঞা সবাই মানছেন, এমনটাও নয়।
বৃহস্পতিবার দিনভর বাঁকুড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে নিজেধাজ্ঞা রয়েছে এমন জায়গায় তামাক সেবন করতে দেখা গিয়েছে অনেককেই। খোদ জেলা শাসকের দফতর প্রাঙ্গণেই এক সরকারি আধিকারিককে সিগারেটে সুখ টান দিতে দিতে হেঁটে যেতে দেখা গেল। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরের আউট ডোরের সামনেও অনেককে দেখা গিয়েছে সিগারেট সেবন করতে।
এই ঘটনায় প্রশাসনের প্রতি জেলার বাসিন্দাদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের দাবি, শুধু নিয়ম জারি করে ক্ষান্ত না থেকে তা বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করুক প্রশাসন।” অতিরিক্ত জেলাশাসক নবকুমারবাবু বলেন, “মানুষের অভ্যাস পাল্টাতে একটু সময় লাগছে। তবে আমরা কড়া অবস্থান থেকে সরছি না। বাঁকুড়া শহরে বিভিন্ন এলাকায় শীঘ্রই পরিদর্শন চালাব।”