সুকুমার টুডু। নিজস্ব চিত্র
বাড়ির অন্যেরা গিয়েছিলেন মুকুটমণিপুরে বেড়াতে। বাড়িতে থেকে গিয়েছিলেন ষাটোর্ধ্ব বাবা ও তাঁর বছর চব্বিশের ছেলে। বেড়িয়ে ফিরে তাঁরা দেখলেন, মেঝেতে পড়ে রয়েছে বৃদ্ধের অসাড় দেহ। ছেলে ঘুমে অচেতন। ঘরময় মদের গন্ধ। শুক্রবার সন্ধ্যায় খাতড়া থানার দাতারামপুরের ঘটনা। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, লম্বোদর টুডুর (৬৩) মৃত্যু হয়েছে। তাঁকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর ছেলে সুকুমার টুডু।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লম্বোদরবাবু প্রাক্তন সিআরপি কর্মী। ঘটনার সময় তাঁর পরিবারের লোকজন মুকুটমণিপুরে গিয়েছিলেন। ফাঁকা ঘরে ছেলে সুকুমারের সঙ্গে বসে মদ খান লম্বোদরবাবু। পুলিশের দাবি, সুকুমার তাদের কাছে জেরায় দাবি করেছে, নেশা করে লম্বোদরবাবু ছেলের কাছে একটি বিড়ি খোঁজেন। সুকুমার বিড়ি দেয়নি। এরপরেই তিনি ছেলের বুকে ঘুঁষি মারেন বলে অভিযোগ। বাবার কাছে মার খেয়ে বাড়িতে থাকা লোহার পাইপ তুলে নেয় সুকুমার। ওই পাইপ দিয়ে সে বাবার পিঠে আঘাত করে বলে পুলিশককে জানিয়েছে।
মার খেয়ে লুটিয়ে পড়েন লম্বোদরবাবু। তার পরে কী হয়েছে সুকুমার জানে না। সে তখন ঘুমিয়ে পড়েছিল। সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন বাড়িতে ফিরে দেখেন, লম্বোদরবাবু মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। সুকুমার বাড়িতে ঘুমোচ্ছে। পড়শিরা জড়ো হয়ে লম্বোদরবাবুকে খাতড়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে, চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান।
ঘটনাটি নিয়ে লম্বোদরবাবুর এক পড়শি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ সুকুমারকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুকুমার পুলিশের কাছে খুনের কথা স্বীকার করেছেন। তদন্তকারী এক আধিকারিক বলেন, “বাবাকে লোহার পাইপ দিয়ে মারার পরে ঘুমোতে গিয়েছিল সুকুমার। নেশা কাটতে বাবার মৃত্যুতে আফসোস করছে সে।”
শনিবার ধৃতকে খাতড়া আদালতে তোলা হয়। আদালত সুকুমারকে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।