আশঙ্কা কান ঝালাপালার

দুর্গাপুজোর মতোই কালীপুজোতেও পুজোর উদ্যোক্তা ও মাইক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে কী ভাবে বিধি মেনে মাইক বাজানো ও বির্সজন দিতে হবে তার নিয়ম বিশদে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মহকুমা পুলিশ সূত্রের খবর, সমস্ত থানাই এই বৈঠক করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৯ ০০:০২
Share:

প্রতীকী ছবি।

লাগামছাড়া শব্দদূষণ আটকাতে গত বছর দুর্গাপুজোর আগে থেকেই সক্রিয় হয়েছিল প্রশাসন। যার রেশ চলেছিল কালীপুজো পর্যন্ত। পুজোর উদ্যোক্তা থেকে মাইক ব্যবসায়ীরা, সকলেই শব্দের মাত্রা সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। কিন্তু এ বছর আপাতদৃষ্টিতে তেমন প্রশাসনিক তৎপরতা চোখে না পড়ায় কিছুটা হলেও আশঙ্কায় রয়েছেন পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর মহকুমার মানুষ।

Advertisement

দুর্গাপুজো থেকে কালীপুজো। বরাবরই পুরুলিয়ায় সর্বজনীন পুজোর জৌলুস বেশি থাকে রঘুনাথপুর মহকুমার আদ্রা, রঘুনাথপুর বা জেলার শিল্পাঞ্চল হিসাবে পরিচিত নিতুড়িয়া ব্লক এলাকায়। সূত্রের খবর, মহকুমা এলাকায় পুজোর সময়ে বেশ কিছু এলাকায় শব্দদূষণ হয় এই মর্মে খবর পেয়ে গত বছর পুজোর আগেই পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে নিজে অভিযানে নেমেছিলেন মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর। সঙ্গে নিয়েছিলেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোলের কার্যালয়ের এক আধিকারিককে। আদ্রা ও রঘুনাথপুর এলাকায় মাইক ব্যবসায়ীদের বাড়িতে গিয়ে মাইক বাজিয়ে ‘সাউন্ড লিমিটার’ যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষা করেছিলেন শব্দের তীব্রতা। কয়েকটি মাইক আটকও করেছিলেন সে দফায়।

এ বার অবশ্য সেই ছবি চোখে পড়েনি। তবে পুলিশ, প্রশাসনের দাবি, শব্দদূষণরোধে অভিযান না হলেও সর্তকতামূলক বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুর্গাপুজোর মতোই কালীপুজোতেও পুজোর উদ্যোক্তা ও মাইক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে কী ভাবে বিধি মেনে মাইক বাজানো ও বির্সজন দিতে হবে তার নিয়ম বিশদে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মহকুমা পুলিশ সূত্রের খবর, সমস্ত থানাই এই বৈঠক করেছে। কয়েকটি থানা জানাচ্ছে, কালীপুজোর উদ্যোক্তা ও মাইক ব্যবসায়ী সকলকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পুজো ও বির্সজনে ডিজে ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ। প্রতিমা বির্সজনের শেষ দিনটিও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে, বিধি ভাঙলে সকলের বিরুদ্ধেই আইনমাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘গত বার গোটা জেলা জুড়েই শব্দদূষণ রোধে সমস্ত থানার পুলিশ মাইক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে বিধি ভাঙার অভিযোগে মাইক ও সাউন্ড বক্স আটক করেছিল। তার পরে গত বছর শব্দবিধি ভাঙার অভিযোগ ওঠেনি। সে কথা মাথায় থাকায় এ বারেও দুর্গাপুজোয় শব্দবিধি ভাঙার অভিযোগ পায়নি থানাগুলি।” দুর্গাপুজোয় বিধি ভেঙে মাইক, সাউন্ডবক্স বাজানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাননি বলে জানিয়েছেন রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসকও। তিনি বলেন, ‘‘বিধি ভেঙে মাইক বাজানোর কোনও অভিযোগ পুলিশ, প্রশাসনের কাছে আসেনি। আমরাও ঘুরে সে রকম কিছু দেখতে পাইনি।”

তবে রঘুনাথপুর মহকুমার কয়েকটি থানার বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, পুজোর সময় সুযোগ পেলেই উচ্চস্বরে মাইক বাজিয়েছে বেশ কয়েকটি পুজো কমিটি। সে প্রেক্ষিতেই তাঁদের আশঙ্কা, কালীপুজোর ক্ষেত্রেও শব্দবিধি ভাঙার ঘটনা ঘটতে পারে। তবে মহকুমাশাসক বলছেন, ‘‘দুর্গাপুজোর আগে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার সমস্ত থানার ওসি ও আইসিদের নিয়ে বৈঠক করে শব্দদূষণ রোধে সক্রিয় হতে নির্দেশ দেন। কালীপুজোতেও শব্দবিধি মেনেই পুজো ও বির্সজন হবে বলে আশাবাদী আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন