চাঁদার ঠেলায় বন্ধের মুখে পাথর শিল্পাঞ্চল

এই শিল্পাঞ্চল বন্ধ হয়ে পড়লে শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার। এবং পরোক্ষ ভাবে জড়িত বহু মানুষ। এই সমস্ত পরিবার কর্মহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৭ ০২:৫৭
Share:

বাজার খারাপ। বন্ধ পাথর-কল। নিজস্ব চিত্র

ক্রমে পাথর শিল্পাঞ্চলের উপর দিয়ে যাওয়া খালি এবং ভর্তি দুটি গাড়িতেই চাঁদা আদায়কারীদের সংখ্যা বাড়ছে। রাস্তার মধ্যে নতুন নতুন জায়গায় নতুন করে দল গঠন করে গাড়ির চালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এর ফলে শিল্পাঞ্চলে পাথর ভর্তি করতে আসতে চাইছেন না গাড়ির চালকরা। বেশিরভাগ গাড়ি চালক পাথর ভর্তি করতে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। মালিক পক্ষের দাবি, রামপুরহাট থানার শালবাদরা পাথর শিল্পাঞ্চলে এর ফলে পাথর বিক্রি কমে গিয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনের সদর্থক ভূমিকার অভাবকেই দায়ী করেছেন তাঁরা। সামনের শনিবার এ নিয়ে বৈঠকে বসবেন তাঁরা।

Advertisement

পরিস্থিতি এমনই মালিক পক্ষের দাবি, কেবল বিক্রি কমা নয়, এই অবস্থা চলতে থাকার জন্য শালবাদরা পাথর শিল্পাঞ্চল প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে। ঘটনা হল, এই শিল্পাঞ্চল বন্ধ হয়ে পড়লে শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার। এবং পরোক্ষ ভাবে জড়িত বহু মানুষ। এই সমস্ত পরিবার কর্মহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ নিয়ে বিস্তারিত ভাবে কথা বলতে শনিবার শালবাদরা পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সদস্যরা বৈঠকে বসবেন। সেখানে এলাকার পাথর ব্যবসার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং নতুন নতুন জায়গায় চাঁদা আদায়কারীদের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা আলোচনা হবে। পুলিশ-প্রশাসনের উদাসীন মনোভাব নিয়েও কথা হবে। আলোচনার সিদ্ধান্তের দিকে পাথর ব্যবসায়ীরা তাকিয়ে আছেন। কেননা, আগামী দিনে ব্যবসা চালু থাকবে না বন্ধ থাকবে ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।

Advertisement

শালবাদরা পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সম্পাদক সুখেন্দু রায় বলেন, ‘‘শালবাদরা পাথর শিল্পাচঞ্চলের ঠাকুরপুরা এলাকায় ১০০টি পাথর ভাঙা কারখানা আছে। ওই সমস্ত ক্র্যাসার ঝাড়খন্ড এবং রামপুরহাট থানার শুলুংগা এলাকার একটি পাথর খাদানের উপর নির্ভর করে চালু ছিল। গত আট মাস ধরে পাথর শিল্পাঞ্চল যাওয়ার রাস্তায় ঠাকুরপুরা গির্জার মোড়, বুড়িতলা, চাঁদনি, নিরিষা, মাসড়া— এই সমস্ত জায়গাগুলিতে চাঁদা আদাইকারীদের সংখ্যা বেড়েছে।’’

তিনি জানান, চাঁদা আদায় করার জন্য কোনওক্ষেত্রে ২০ টাকা থেকে ১০০ টাকা করে প্রতি গাড়িতে নেওয়া হয়। এর ফলে গাড়ির চালকরা পাথর কিনতে শালবাদারা পাথর শিল্পাঞ্চলে আসতে চাইছে না। ফলে ব্যবসার অবস্থাও দিনের পর দিন খারাপ হচ্ছে।

সমিতির দাবি, চাঁদা আদায় বন্ধ করার জন্য পুলিশ-প্রশাসনকে একাধিকবার জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।

উল্টে আরও বেড়েছে। অথচ চাঁদা আদায়কারীদের জন্য এলাকায় অবরোধে একজন গাড়ি চালক মারা যান। একটি গাড়িতে অগ্নি সংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। রামপুরহাট মহকুমাশাসক সুপ্রিয় দাস বলেন, ‘‘চাঁদা আদায়কারী, মালিক পক্ষ এবং পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক এর আগে হয়েছে। সমাধান সূত্র বের করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন