Local Train

ট্রেন চালুর জোর দাবি জেলায়

বীরভূমের অন্যতম বাণিজ্যকেন্দ্র সাঁইথিয়া। দক্ষিণবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশনও বটে। সেখানকার ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ, প্রথমে দীর্ঘদিন লকডাউনে তাঁদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২০ ০৩:২২
Share:

রামপুরহাট স্টেশন। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

লোকাল ট্রেন চালুর দাবিতে হুগলি, হাওড়া-সহ নানা জেলায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ-অবরোধ শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় দৈনিক ট্রেন চালুর দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে বীরভূমেও। জেলার মানুষের দাবি, তাঁদের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙতে শুরু করেছে। দ্রুত দৈনিক ট্রেন চালু না হলে তাঁরাও বাধ্য হবেন পথে নামতে। জেলার ব্যবসায়ী মহল থেকে নিত্যযাত্রীরা জানাচ্ছেন, সাত মাস স্বাভাবিক ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় তাঁদের অশেষ দুর্গতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। আনলক পর্বে চাকরি, ব্যবসা, চিকিৎসা-সহ নানা কাজে প্রায়ই তাঁদের কলকাতা, বর্ধমান-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে যেতে হচ্ছে। ট্রেন বন্ধ থাকায় এক দিকে হয়রানির শিকার হচ্ছেন, অন্য দিকে আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে তাঁদের দাবি। জেলার নলহাটি, মুরারই, রাজগ্রাম, সিউড়ি, বোলপুর, দুবরাজপুর কিংবা রামপুরহাট— সর্বত্রই দৈনিক ট্রেন চালুর দাবিতে অনেকেই এ বার রেল কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁদের আবেদন লিখিত ভাবে জানানোর জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। প্রয়োজনে আন্দোলনেরও। রাজ্য তথা দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ তীর্থস্থান তারাপীঠ। সেই তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় এবং সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায় জানান,

Advertisement

স্বাভাবিক সময়ে ৭০ শতাংশ তীর্থযাত্রী হাওড়া ও শিয়ালদহ থেকেই ট্রেনে রামপুরহাট স্টেশন হয়ে তারাপীঠে মা তারার দর্শন করতে আসেন। অনেক দিন হল মন্দির খুলে গিয়েছে। কিন্তু, ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় পুণ্যার্থীরা আসতে পারছেন না। ফলে, তারাপীঠে পর্যটন শিল্প প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে। তারাপীঠের অধিকাংশ লজ বন্ধ হয়ে আছে। এর ফলে লজ ব্যবসায়ীরা তো বটেই লজ ব্যবসার উপর নির্ভরশীল আরও কয়েক হাজার কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে কার্যত রুজিহীন হয়ে পড়েছেন। তারাপীঠের পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য অনুসারী ব্যবসাও বন্ধ হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পূর্ব রেলের কাছে হাওড়া এবং শিয়ালদহ থেকে রামপুরহাট পর্যন্ত দৈনিক স্পেশাল ট্রেন চালু করার জন্য দাবি জানানোর জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে তারাপীঠ মন্দির কমিটি। খুব শীঘ্রই তাদের লিখিত দাবি রেল কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হবে বলে মন্দির কমিটি জানিয়েছে।

বীরভূমের অন্যতম বাণিজ্যকেন্দ্র সাঁইথিয়া। দক্ষিণবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশনও বটে। সেখানকার ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ, প্রথমে দীর্ঘদিন লকডাউনে তাঁদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আনলক পর্বে ব্যবসা চালু হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তা সচল রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। কারণ, তাঁদের অধিকাংশই কলকাতা থেকে মালপত্র এনে ব্যবসা করেন। ট্রেন বন্ধ থাকায় অনেক বেশি টাকা খরচ করে তাঁদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। বেশি মালপত্রও আনা যাচ্ছে না, ভাড়া অত্যধিক বেশি হওয়ায়। ফলে, দোকানে সামগ্রীও আগের চেয়ে কমেছে। অবিলম্বে বিশ্বভারতী ও ময়ূরাক্ষী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালু করার দাবিতে আন্দোলনে নামবেন বলে সাঁইথিয়ার ব্যবসায়ী মহল জানিয়েছে।

Advertisement

মুরারই ও নলহাটির বিস্তীর্ণ তল্লাটের মানুষজন পুরোপুরি ট্রেনের উপরে নির্ভরশীল। রাজগ্রাম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোবিন্দ লাল বিশ্বাস বলেন, ‘‘সাহেবগঞ্জ-বর্ধমান এবং হাওড়া-মালদহ ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস অবিলম্বে চালু করা দরকার। তা হলে এলাকার ব্যবসায়ী থেকে নিত্যযাত্রীরা খুবই উপকৃত হবেন।’’ জেলার অধিকাংশ নিত্যযাত্রী জানিয়েছেন রেল কর্মীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য স্পেশাল ট্রেনে জরুরি প্রয়োজনে তাঁরা

চাপতে গেলে আরপিএফ

প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের সরিয়ে দিচ্ছেন। সেক্ষেত্রে দৈনিক ট্রেন চালু হওয়ার জন্য জেলাবাসী অধীর অপেক্ষায় দিন গুনছেন বলে নিত্যযাত্রীরা জানিয়েছেন।

স্টেশন ম্যানেজার হাদিউজ জামান বলেন, ‘‘দৈনিক ট্রেন পরিষেবা চালুর দাবিতে বিভিন্ন স্টেশনে অবরোধ হচ্ছে শুনছি। তবে আমাদের কাছে কোনও নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কবে নাগাদ দৈনিক ট্রেন পরিষেবা হবে বলতে পারব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন