প্রতীকী ছবি।
এক যুবকের বিরুদ্ধে পাঁচিল টপকে স্কুলে ঢুকে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠেছিল সিউড়িতে। সেই অভিযোগের রেশ কাটতে না কাটতেই এ বার স্কুল চত্বরেই এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল পড়শি যুবকের বিরুদ্ধে। শনিবার সন্ধেয় ঘটনাটি ঘটে মহম্মদবাজার থানা এলাকার কাপাসডাঙা খাদেম হোসেন উচ্চবিদ্যালয় চত্বরে। শনিবার রাত ১২টায় মহম্মদবাজার থানায় লিখিত অভিযোগে বছর ষোলোর নবম শ্রেণির ওই ছাত্রী জানায়, পিসির বাড়ি থেকে ফেরার পথে স্কুল চত্বরের একটি বারান্দায় তাকে ধর্ষণ করে পড়শি যুবক সুরজিৎ দাস। রবিবার দুপুরে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। সোমবার সিউড়ি আদালতে তাকে পেশ করা হবে।
মহম্মদবাজার থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগকারিণীকে সিউড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তার মেডিক্যাল টেস্টও করা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পরই পকসো আইনে মামলা রুজু হয়েছে। সিউড়ি জেলা হাসপাতাল জানিয়েছে, ওই কিশোরীর ছাত্রীর শারিরীক অবস্থা স্থিতিশীল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাপাসডাঙার ওই স্কুল ঘেঁষেই রয়েছে ছাত্রীটির বাড়ি, তার পিসির বাড়ি এবং অভিযুক্ত যুবকের বাড়ি। স্কুলের মূল ভবন সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা থাকলেও, একটি অংশ বাইরে রয়েছে। সেখানেই একটি ক্লাসরুমের বাইরে সামান্য উঁচু করে ঘেরা বারান্দা। ছাত্রীর পরিবারের দাবি, গত কাল সন্ধেয় পিসির বাড়ি থেকে ফেরার সময় সুরজিৎ তাঁদের মেয়েকে ওই বারান্দাতেই ধর্ষণ করে। একই অভিযোগ ছাত্রীরও। সেই সময় হঠাৎ মেয়েটির এক আত্মীয় সেখানে পৌঁছলে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন এবং বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির সভাপতি কবিরুল ইসলামের বক্তব্য, পাঁচিল-ঘেরা স্কুলের মূল ভবন রাতে তালাবন্ধ থাকে। তাই সেখানে এমন ঘটনা ঘটা সম্ভব নয়। তার উপর স্কুলে রাতপাহারায় থাকেন সিভিক ভল্যান্টিয়ার। আর যে অংশে ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে, সেটা একেবারেই জনবহুল এলাকাঘেঁষা। একটু চিৎকার করলেই লোকজন ছুটে আসবে। একই মত ওই এলাকার বাসিন্দাদেরও।
এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা জানিয়েছেন, ওই ছাত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল অভিযুক্তের। কিন্তু সুরজিতের অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়। তা নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। তার মধ্যেই ধর্ষণের অভিযোগ উঠল। অভিযুক্তের মা কল্পনা দাসের দাবি, ‘‘আমার ছেলে নির্দোষ। ওই মেয়েটির পরিবার ওকে ফাঁসাচ্ছে।’’ নির্যাতিতা ছাত্রীর যে আত্মীয় শনিবার সন্ধেয় স্কুলের ওই বারান্দায় পৌঁছেছিলেন, তাঁর দাবি—‘‘এমন ঘটনা দেখার পর চুপ করে বসে থাকা যায় না। এমন কাণ্ড ঘটানোর পর যাতে ওই ছেলেটি আমাদের মেয়েকে বিয়ে করে, তাই ওদের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম। ওরা রাজি না হওয়ায়, পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’’