‘নির্মল’ হোক স্কুলও, দাবি করমকালের ছাত্রছাত্রীদের

উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলটির বয়স ৫০ বছর। পড়ুয়ার সংখ্যা ৭৫০-এর আশপাশে। অথচ এখনও সেই স্কুলে গড়ে ওঠেনি পানীয় জলের সুষ্ঠু ব্যবস্থা। মিড-ডে মিল থেকে খাওয়ার জল, স্কুল চত্বরে থাকা না ঢাকা কুয়োর জলই সম্বল পড়ুয়াদের!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:৪১
Share:

জলের জন্য এই কুয়োই একমাত্র ভরসা। ছবি:দয়াল সেনগুপ্ত

উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলটির বয়স ৫০ বছর। পড়ুয়ার সংখ্যা ৭৫০-এর আশপাশে। অথচ এখনও সেই স্কুলে গড়ে ওঠেনি পানীয় জলের সুষ্ঠু ব্যবস্থা। মিড-ডে মিল থেকে খাওয়ার জল, স্কুল চত্বরে থাকা না ঢাকা কুয়োর জলই সম্বল পড়ুয়াদের!

Advertisement

শুধু কী পানীয় জল? সমস্যা রয়েছে পড়ুয়াদের ব্যবহারযোগ্য শৌচাগার না থাকা নিয়েও। স্কুলে একটি তফশিলি জাতি ও উপজাতি ছাত্রাবাস থাকায় সঙ্কট আরও প্রকট। সমস্যার মূলে দুবরাজপুরের করমকাল এস এন বিদ্যাভবন। পড়ুয়া শিক্ষক অভিভাবক— সকলেরই চাওয়া দ্রুত সমস্যা মিটুক।

স্কুল সূত্রের খবর, দুবরাজপুরের পারুলিয়া পঞ্চায়েতের একমাত্র স্কুল এটি। ১৯৬৬ সালে স্থাপিত স্কুলটি প্রথমে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছিল। বছর দুয়েক আগে থেকে চালু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক। ক্লাসঘরের অভাব না থাকলেও বাকি পরিকাঠামোগত সমস্যা এই স্কুলের সঙ্গী। মাত্র ১০ জন শিক্ষক সম্বল ৭৫-এরও বেশি পড়ুয়ার জন্য। নেই শিক্ষাকর্মীও। তবে স্কুলের সব থেকে বড় সমস্যা পানীয় জলের। পড়ুয়া ও শিক্ষকেরা বলছেন, ‘‘গভীর নলকূপ তৈরির চেষ্টা হয়নি বললে ভুল বলা হবে। তবে স্কুল চত্বরে যতগুলি নলকূপ তৈরি হয়েছিল, তার একটির জলও পানের যোগ্য নয়। আয়রনযুক্ত লালজল বের হয়।’’ স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকান্ত ভাট্টাচার্য জানাচ্ছেন, সেই কারণে স্কুলের কুয়োই জলের একমাত্র আধার। ‘‘কিন্তু ভয় হয়, এই বুঝি পড়ুয়ারা পেটের রোগে আক্রান্ত হল। বিশেষত বর্ষায় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও লাভ কিছু হয়নি,’’—বলছেন সুকান্তবাবু।

Advertisement

প্রধান শিক্ষকের কথার প্রতিধ্বনি শোনা গেল একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া স্নিগ্ধা রায়, সোনিয়া খাতুন, মহম্মদ শফিক খান, আকাশ দলুইদের কথায়। পড়ুয়ার বলছে, ‘‘আমরা এই স্কুলে কেউ চার বছর কেউ বা পাঁচ বছর ধরে পড়ছি। কিন্তু এত দিনেও জল সমস্যা মেটেনি।’’ অন্য শিক্ষকদের কথায়, ‘‘এখন স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু স্কুল খললে নিচু ক্লাসের পড়ুয়াদের জন্য বেশি ভয়।’’ বর্তমানে ‘মিশন নির্মল বাংলা’ নিয়ে এত ঢাক্কা নিনাদ, অথচ না ওই স্কুলে না স্কুল চত্বরে থাকা তফশিলি জাতি ও উপজাতি ছাত্রাবাসে থাকা ছাত্রদের জন্য কোনও ব্যবহার্য শৌচাগার আছে। ছাত্রাবাসে থাকা কয়লা মুর্মু, হরিদাস মুর্মু, সঞ্জয় মারডিরা বলছে, ‘‘সত্যিই খুব অসবিধা হয়।’’

দুবরাজপুরের বিডিও বনমালি রায় বলছেন, ‘‘এমন অসুবিধার কথা ওই স্কুলে রয়েছে, তা জানা ছিল না। অবশ্যই বিষয়টি দেখছি। তবে শৌচাগার নেই, এটা মানা গেল না। কারণ স্কুলে শৌচাগার নেই, এমন তালিকাভুক্ত স্কুলের তালিকায় করমকালের থাকার কথা নয়। তবুও দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন