শ্রীচরণেষু কিংবা প্রিয় সম্বোধন করে প্রিয়জনকে তামাক বা ধূমপান ছাড়াতে স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে চিঠি লেখা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সেই প্রতিযোগিতায় দুটি বিভাগে (ষষ্ঠ থেকে অষ্ঠম এবং দশম থেকে দ্বাদশ) সেরা হল যথাক্রমে মল্লারপুর ধরণীদেবেন উচ্চ বিদ্যালয় এবং মহম্মদবাজারের কাঁইজুলি বিদ্যানিকেতন। প্রতিযোগিতা হয় জেলা পরিষদের সভাকক্ষে। বৃহস্পতিবার সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি, ডেপুটি সিএমওএইচ ২ তথা টোব্যাকো কন্ট্রোলের জেলা নোডাল অফিসার শকুন্তলা সরকার।
শকুন্তলাদেবী জানান, গত দু’মাস ধরে জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরের পরামর্শ মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাছাই করা ২০টি স্কুলে আগেই এই প্রতিযোগিতা হয়েছে। প্রতিটি স্কুল থেকে সেরা দুটি গ্রুপের দু’জন করে মোট ৮০ জন পড়ুয়া ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। সেরা পত্র-লেখকদের স্কুলব্যাগ, শংসাপত্র এবং রাজ্য সরকারের দেওয়া ৫০০ টাকা পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। বাকিদের দেওয়া হয়েছে ব্যাগ ও শংসাপত্র।
হঠাৎ এমন উদ্যোগ কেন?
স্বাস্থ্য আধিকারিক ও প্রশাসনের কর্তাদের কথায়, ধূমপান ক্ষতিকারক সকলেই জানেন। কিন্তু, পরোক্ষে ধূমপানও যে সম পরিমাণ ক্ষতিকারক, সেটা কত জন জানেন বা মানেন? প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ হয়েছে আইন করে। সমস্ত সরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমনকি বেশি সংখ্যক ঘর বিশিষ্ট হোটেল-সহ বিভিন্ন জায়গায় ধূমপান বা তামাক সেবন ও বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। একই ভাবে জেলায় টাস্ক ফোর্স গড়ে সমাজকে তামাক বর্জিত করার চেষ্টা চলছে। তথ্য বলছে, প্রতিদিন হাজার হাজার কমবয়সি ছেলেমেয়েরা (বয়স মূলত ১৪-১৮) ধূমপানে আসক্ত হচ্ছে। প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে ধূমপান ও তামাক সেবন জনিত রোগের প্রকোপ। যাঁরা ধূমপান করেন তাঁরা বিপদে ঝাঁপ দিয়েছেন। যাঁরা ধূমপান করেন না বা কোনও ধরনের তামাক জাতীয় নেশার দ্রব্য ব্যবহার করেন না তাঁরাও সুরক্ষিত নন, জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরাই। পরোক্ষে ধূমপানও যে সম পরিমাণ ক্ষতিকারক গবেষণায় তার প্রমাণও মিলেছে।
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি বলছেন, ‘‘পড়ুয়াদের সচেতন করা গেলে সমাজকে সচেতন করা অনেক সহজ। চিঠি লিখতে গিয়ে ওই স্কুলগুলির পড়ুয়ারা বুঝল কতটা মারাত্মক তামক সেবন।
তাতে ওরা নিজেরা ও পরিজনকে এ ব্যাপারে সহজেই সতর্ক করতে পারবে।’’ এমন চিঠি লিখতে পেরে খুশি খুদে লেখকরাও।