কৃষকের অধিকার রক্ষায় লড়াইয়ের বার্তা সূর্যের

ভাঙড়ের প্রতিবাদকে যে তাঁরা ছড়িয়ে দিতে চান গোটা রাজ্যেই, সেই ইঙ্গিত আগেই দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। রবিবার বহরমপুরে কৃষকসভার মুর্শিদাবাদ জেলা সম্মেলনে কৃষিজমি অধিগ্রহণে রাজ্য সরকারের ভূমিকা থাকার পক্ষে জোর সওয়াল করেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাশীপুর শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৪৮
Share:

কোলতুলপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ময়দানে তোলা নিজস্ব চিত্র।

ভাঙড়ের প্রতিবাদকে যে তাঁরা ছড়িয়ে দিতে চান গোটা রাজ্যেই, সেই ইঙ্গিত আগেই দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। রবিবার বহরমপুরে কৃষকসভার মুর্শিদাবাদ জেলা সম্মেলনে কৃষিজমি অধিগ্রহণে রাজ্য সরকারের ভূমিকা থাকার পক্ষে জোর সওয়াল করেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। সোমবার কৃষকসভার ১৯তম পুরুলিয়া জেলা সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশেও কৃষকদের অধিকার নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। তুলে এনেছেন ভাঙড় প্রসঙ্গ।

Advertisement

এ দিন কাশীপুর বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া মাঠের ওই সমাবেশে সাত-আট হাজার লোকের ভিড় হয়েছিল। সূর্যবাবু সেখানে বলেন, ‘‘সারের দাম বাড়লে, বিদ্যুতের দাম বাড়লে শুধু বাম কর্মীদের জন্যই বাড়ে না, তৃণমূল বা বিজেপির ঝান্ডা যাঁরা বহন করেন, তাঁদের জন্যও বাড়ে। লড়াইয়ে তাই আপনাদেরও পাশে চাইছি।’’ কৃষক-স্বার্থে তাঁদের লড়াইয়ে এগিয়ে আসতে বলে সভায় উপস্থিত বাম-কর্মীদের মনে করিয়ে দেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের যে ভূমিকা আছে, তা পালন করতে হবে। দেশে কৃষকের আত্মহত্যা বাড়ছে। বাড়ছে এই রাজ্যেও।’’

তৃণমূলকেও এক হাত নিয়েছেন সূর্যবাবু। অভিযোগ করেছেন, রবিবার বহরমপুরে যে মাঠে সভা করার কথা ছিল, সেই মাঠে ক্রিকেট খেলা হবে বলে সভা করতে দেওয়া হয়নি। সংকীর্ণ একটি জায়গায় সভার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। পিছনের কাপড় খুলে তারদিক ঘুরে ঘুরে বক্তৃতা করতে হয়েছে। এর পরেই ভাঙড়-প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘‘স্বাধীনতা মানে পায়ের নীচে মাটি। অধিকার মানে কৈফিয়ত চাইবার অধিকার। আজ সেই অধিকার আক্রান্ত হচ্ছে বাংলায়। আমাদের রাজত্বে মানুষ যে অধিকার অর্জন করেছিল, তা খানখান হয়ে যাচ্ছে। ভাঙড়ের ঘটনায় যাঁরা নীরব প্রতিবাদ করেছিলেন, তাঁদের লালবাজারের সেন্ট্রাল লকআপে রাখা হয়েছিল। অনেক রাতে বলেছিল মুচলেকা দিতে হবে। কিন্তু প্রতিবাদীরা তা দিতে রাজি হননি। পর দিন আদালত নিঃশর্তে সকলকে মুক্তি দিয়েছে।’’

Advertisement

দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অমিয় পাত্র বলেন, ‘‘শাসক মনে করছে আমার সঙ্গে পুলিশ আছে আমার ভয় কী! প্রতিবাদ করলেই পুলিশের ভয় দেখানো হচ্ছে। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলের নেতারা ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছেন। পুলিশ নিয়ে যে আর ভয় দেখানো যাবে না, ভাঙড় তা দেখিয়ে দিয়েছে। দেখিয়েছে বোড়ালও। মানুষ জাগলে কোন অত্যাচারী শাসক টিঁকে থাকতে পারে না।’’ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে সূর্যবাবু বলেন, তিন মাস পরে নবান্নে আপনার সঙ্গেও মোলাকাত হবে।

নোট বাতিলের প্রসঙ্গ তুলে আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও। সূর্যবাবু প্রশ্ন তোলেন, ‘‘হাজার দিন পেরিয়ে গিয়েছে। একটা কালো টাকা উনি আনতে পেরেছেন কি? ওঁর তো ৫৬ ইঞ্চি বুকের ছাতি। অথচ সংসদে বিরোধীদের কোনও প্রশ্নের জবাব উনি দিচ্ছেন না। ভাষণ দিয়ে কিছু হবে না। মানুষ জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝবেন নোট বাতিলের জের।’’

এ দিনের সভায় বক্তৃতা দেন জেলা কৃষক সভার সম্পাদক কাশীনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন