দেশের বিভিন্ন পুর এলাকায় বা গ্রামে দরিদ্র মানুষজনের পাকা বাড়ি তৈরির টাকায় ঠিক মতো কাজ হচ্ছে তো? এ বারে সেটাই অনলাইনে খতিয়ে দেখবে কেন্দ্র। এই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ‘ভুবন’ নামে একটি অ্যাপ।
আবাস যোজনায় পুর এবং পঞ্চায়েত এলাকায় দরিদ্রদের জন্য পাকা বাড়ি তৈরি করতে অর্থ দেয় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি বাড়ি তৈরিতে বরাদ্দ ঠিক করা হয় ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা। তার মধ্যে কেন্দ্র দেড় লক্ষ এবং রাজ্য ১ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা দেয়। প্রাপক নিজে দেন ২৫ হাজার টাকা। সরকারি টাকা মোট চারটি কিস্তিতে প্রাপককে দেওয়া হয়। প্রতিটা কিস্তির টাকায় কতটা কাজ হল তা খতিয়ে দেখে পরের কিস্তি মঞ্জুর করা হয়। এই খতিয়ে দেখার পদ্ধতিতেই বদল এনেছে ‘ভুবন’। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভা বা ব্লকের কর্মীরা এই কাজের দেখভাল করেন। আগে তাঁরা পরিদর্শন করে সেই নথি প্রশাসনের কাছে জমা রাখতেন। এ বারে ওই নথিগুলিই আপলোড করতে হবে অনলাইনে।
‘ভুবন’ নামে অ্যাপটি তৈরি করেছে ইসরো। এই অ্যাপ পরিদর্শনের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের মোবাইলে ইনস্টল করে তাঁদের মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্টার করতে হয়। কোনও জায়গায় অ্যাপটি চালু করলে মোবাইলের জিপিএস প্রযুক্তি দিয়ে এটি একেবারে অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশ ধরে নির্দিষ্টি অবস্থান দেখিয়ে দেয়। কর্মীরা এই অ্যাপে নির্দিষ্ট জমিতে বাড়ি তৈরির কাজ কতদূর তার ছবি প্রতি দফায় তুলে আপলোড করবেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সমস্ত ছবি এবং তথ্য প্রাপকের নির্দিষ্ট ই-ফাইলে থেকে যাবে। পুরুলিয়া পুরসভার ইনফর্মেশন অফিসার রাজীব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ই-ফাইল খুলে দিল্লি বা কলকাতা থেকে প্রাপকের বাড়ি তৈরির কাজ কতদূর তা দেখা যাবে।’’ বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, জমি নির্দিষ্ট করে কাজ শুরু করা, লিন্টেন এবং ছাদ ঢালাই, কাজ শেষ হওয়ার পরে বাড়ি দেখতে কেমন হল— প্রতি দফার ছবি আপলোড করা হচ্ছে ফাইলে। প্রশাসনের কর্তা ও কর্মীদের একাংশের দাবি, এই অ্যাপ আবাস যোজনার কাজ এবং লেনদেনে অনেকটাই স্বচ্ছতা এনে দিতে পারে।