শব্দবাজি নয়, উড়বে ফানুস

বিধিভঙ্গ রুখতে কড়া নজরদারি

শেষ পর্যন্ত বিধি মেনেই ৮ পৌষ বাজির অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নিল বিশ্বভারতী। শেষ পর্যন্ত বিধি মেনেই ৮ পৌষ বাজির অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নিল বিশ্বভারতী।

Advertisement

মহেন্দ্র জেনা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৩৪
Share:

শেষ পর্যন্ত বিধি মেনেই ৮ পৌষ বাজির অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নিল বিশ্বভারতী।শেষ পর্যন্ত বিধি মেনেই ৮ পৌষ বাজির অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নিল বিশ্বভারতী। শুক্রবার মেলা আয়োজকদের অন্যতম গৌতম সাহা বলেন, ‘‘পরিবেশ বিধি মেনে এবং জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে আলোর বাজির অনুষ্ঠান হচ্ছে আজ।’’

Advertisement

শান্তিনিকেতন আশ্রমকে ঘিরে এক সময় গ্রামের মানুষের মেলা ছিল এই পৌষ উৎসব। তাঁদেরই সারা বছরের দৈনন্দিন কাজকর্মের মাঝখানে কয়েকটি দিনের আনন্দ উৎসব ছিল এই দিনগুলি। বিনোদনের একটি আকর্ষণীয় অঙ্গ ছিল বাজি পোড়ানো। সুরুলের কার্তিক চন্দ্র মালাকার, বিজয় মালাকাররা পুরুষানুক্রমিক পৌষ উৎসবে বাজি দিয়ে থাকেন। ১২ রকমের কদম গাছ, ৬ রকমের চরকি, তিন রকমের ঝর্ণা, তিন রকমের তুবড়ি, পাঁচ রকমের রকেট, একাধিক রঙ বেরঙের ফানুস এবং আকাশে তারাবাজি থাকত বাজির অনুষ্ঠানে। সে সব আর এ বার হবে না, আদালতের নির্দেশে এটা ধরে নিয়েই অনেকেই বিষণ্ণ ছিলেন। শান্তিনিকেতনের প্রাক্তন গ্রন্থাগারিক স্বপনকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘এই আতসবাজি প্রদর্শনীর সঙ্গে পৌষ উৎসব ও মেলার বিশাল ঐতিহ্য ও আবেগ জড়িয়ে আছে। রবীন্দ্রনাথ বাজি পোড়ানোর আয়োজন বিশেষ ভাবে চাইতেন। প্রথম পৌষমেলাতেও বাজির ব্যবস্থা ছিল। আশির দশকেও বাজি পোড়ানোর অনুষ্ঠান চোখে পড়ার মতো ভিড় দেখা গিয়েছে। আদালতের বিধি এবং নিয়ম নীতি মেনে অনুষ্ঠান হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু বাজি না হওয়ার খবরে খানিকটা বিষণ্ণ লাগছিল।’’

বাজির খবরে খুশি সুরুল দক্ষিণপাড়ার মালাকার পরিবারও। ওই পরিবারের শ্যামল মালাকার এবং চিন্ময় মালাকার জানান, পরিবেশের যাবতীয় বিধি নিষেধ মেনে বাজি তৈরি করেছি।

Advertisement

বাজি ছাড়াও মেলার দূষণ রুখতে পরিবেশ বিধি ঠিকমতো মানা হচ্ছে কিনা, তার উপর এ বার কড়া নজরদারি রয়েছে। মেলার স্টলে স্টলে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য দফায় দফায় ঘুরছেন মেলা কমিটির লোকজন। কিন্তু নির্দেশ এবং বিধি কি মানা হচ্ছে? অভিযোগ উঠেছে, মেলার মাঠে কোথাও উনুনে জ্বালানো হয়েছে। রান্নার কাজ চলছে। বিশ্বভারতী পরিবেশ বান্ধব জেনারেটর ব্যবহারের মুচলেখা দিলেও, মেলার কোথাও কোথাও দেদার চলছে সাধারণ জেনারেটর। নেই পর্যাপ্ত ডাস্টবিন।

মেলাকমিটির অন্যতম আয়োজক গৌতম সাহা অবশ্য বলেন, “অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিধি নিষেধ না মানায়, দুটি স্টলকে প্রদর্শনী মাঠ থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে।” অপ্রতুল্য ডাস্টবিনের কথা স্বীকার করে নিয়ে গৌতমবাবুর দাবি, ‘‘পরিবেশ বান্ধব জেনারেটর ব্যবহার করা হয়েছে।’’

এ দিকে বৃহস্পতিবার থেকেই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ঢল নেমেছে মেলায়। পুলিশ প্রশাসনের নজরদারিও চলছে। মেলা চত্বর এবং আশেপাশে উর্দিধারী পুরুষ-মহিলার পাশাপাশি সাদা পোশাকে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মেলায় চারটি ওয়াচ টাওয়ার, সিসিটিভি রয়েছে মাঠে। ফি বারের মতো বিপর্যয় মোকাবেলার দল ঘুরছে মেলা চত্বরে।

বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্ত বলেন, “নিয়ম নীতি মেনেই আমরা উৎসব করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন