প্রমাণ দিক বিজেপি, সুর চড়াল শাসকদল

পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীরা বিজেপিকে নিয়ে নানা কথা বললেও নিশানায় রইলেন সেই মুকুল রায়ই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৩১
Share:

বক্তা: সমাবেশে বক্তৃতা পরিবহণ মন্ত্রীর। তাঁতিপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

গত শনিবার রাজনগরের তাঁতিপাড়ায় সভা করে রাজ্যে ক্ষমতাসীন শাসকদল ও দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে তোপ দেগেছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। তার সপ্তাহ পরোনোর আগেই সেই তাঁতিপাড়াতেই পাল্টা সভা করে বিজেপির বিরদ্ধে সরব হল তৃণমূল। পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীরা বিজেপিকে নিয়ে নানা কথা বললেও নিশানায় রইলেন সেই মুকুল রায়ই। নাম না করে কেউ বললেন, ‘চাটনিবাবু’, কেউ বললেন ‘পরিযায়ী’।

Advertisement

ঘটনা হল, আগের দিন রাজনগরের জনসভায় দাঁড়িয়ে নাম না করে কেষ্টকেই নিশানা করেছিলেন বিজেপি নেতারা। ছিলেন বিজেপির মহিলা মোর্চার সভাপতি লকেট চট্টোপাধ্যায়, সম্পাদক সায়ন্তন বসু। তবে নাম না নিয়ে অনুব্রতর বিরুদ্ধে ‘ক্ষমতাবলে বিপুল সম্পত্তি’ করার অভিযোগ তুলে ‘দুর্নীতি’ ফাঁস করে গিয়েছিলেন মুকুল রায়-ই। জনসভায় হাতের মুঠোয় চাল দেখিয়ে জনতার উদ্দেশে মুকুল বলেছিলেন, ‘এই যে চাল-টা খাচ্ছেন,সেটা কোন রাইস মিলের জানেন। মিলটার নাম ভোলেবোম রাইস মিল। এর মালিক কে। কবে তৈরি হয়েছে এই মিল।’ কলিকাপুর, গয়েশপুর, খাসকদমপুর ও বোলপুর মৌজায় ৪২৫ কাটা জমি ২০১৪ সালের পরে কেনা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মুকুল। অনুব্রত পাল্টা বলেছিলেন, ‘‘মুকুল মিথ্যে কথা বলছেন। ওই সম্পত্তি অনেক আগেই কেনা।’’

তাতেও যেন স্বস্তি পায়নি তৃণমূল। দলত্যাগী মুকুল পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মানুষকে কী ভাবে ‘বিভ্রান্ত’ করছেন বৃহস্পতিবার তাঁতিপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পিছনের মাঠের সভা থেকে সেটা জানানোই মূল লক্ষ্য ছিল তৃণমূলের। সেই তাগিদেই এক ঝাঁক নেতামন্ত্রীকে হাজির করানো হয়েছিল। কেউ সরাসরি মুকুলের নাম করে, কেউ বিঁধলেন নাম না করে। দাবি উঠল, ‘‘যে অভিযোগ জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে তোলা হয়েছে, তাঁর প্রমাণ দিন মুকুল।’’

Advertisement

বক্তব্য রাখতে গিয়ে পরিবহণ মন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘‘এখানে কয়েক দিন আগে কয়েক’টা পরিযায়ী পাখি এসে বড় বড় কথা বলে গিয়েছে। সেই লোকগুলো রাজ্যের রাজনৈতিক মানচিত্রে একটা হারিয়ে যাওয়া বস্তু। যাঁরা পাড়ার ভোটে জিততে পারবেন না। গ্রাম পঞ্চায়েতের মেম্বার বা কাউন্সিলর হওয়ারও যোগ্যতা নেই।’’

এরপরেই প্রধান বক্তা শুভেন্দু তৃণমূলের উন্নয়নের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে নোট বাতিল থেকে, জিএসটি, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি সহ নানা ইস্যুতে বিজেপিকে আক্রমণ করেন।

আর তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত বললেন, ‘‘তাঁতিপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে সভা। এই পঞ্চায়েতের ১১টি আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতব। চ্যালেঞ্জ। আপনি পারলে রুখে দেবেন।’’ তবে পাল্টা সভায় তেমন ভিড় হয়নি বলে আক্ষেপ রয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। পুলিশের হিসেবে আগের দিনের সভা ছাপিয়ে গেলেও লোকসংখ্যা খুব একটা বেশি হয়নি। তবে দিন কয়েকের মধ্যেই রাজনগর-কলকাতা সরকারি বাস পরিষেবা চালু হচ্ছে, শুভেন্দু রাজনগরের বাসিন্দাদের জন্য এই সুখবর দিয়ে গিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement