তারা মায়ের ভোরের স্নান দেখা বন্ধ হল

এত দিন তারাপীঠ মন্দিরের গর্ভগৃহে থাকা মাতারার শিলামূর্তির স্নান দেখতে রাত থেকেই দর্শনার্থীরা মন্দির চত্বরে লাইন দিয়ে ভিড় করতেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তারাপীঠ শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:০৬
Share:

পয়লা মাঘ অর্থাৎ ১৫ জানুয়ারি, সোমবার থেকে মাতারার ভোরের স্নানাদি-ক্রিয়াকর্ম সমস্ত রকমের দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ করার কথা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাল তারাপীঠ মন্দির কমিটি। শুক্রবার এ ব্যাপারে সাংবাদিক বৈঠকে তারাপীঠ মন্দির কমিটির সেবাইত সমিতির সভাপতি, সম্পাদকরা অন্য সদস্যদের উপস্থিতিতে লিখিত আকারে তা জানিয়ে দেন।

Advertisement

এত দিন তারাপীঠ মন্দিরের গর্ভগৃহে থাকা মাতারার শিলামূর্তির স্নান দেখতে রাত থেকেই দর্শনার্থীরা মন্দির চত্বরে লাইন দিয়ে ভিড় করতেন। অনেক দর্শনার্থী আবার স্নানের নানা জিনিস দিয়ে সেবাইতদের সাহায্যও করতেন। অতি উৎসাহী দর্শনার্থীরা আবার নিজেরাই মায়ের শিলামূর্তি নানা উপাচারে স্নান করাতেন। এ বার সেই প্রথারই অবলুপ্তি হতে চলেছে তারাপীঠ মন্দিরে।

তারাপীঠ মন্দির কমিটির সেবাইত সমিতির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় জানান, দীর্ঘ দিন থেকে মন্দিরের গর্ভগৃহে থাকা মাতারার শিলামূর্তি দুধ, সুগন্ধী অগুরু চন্দন, নারকেল জল, ডাবের জল, সুগন্ধী তেল, ঘি-মধু, দই ইত্যাদি দিয়ে স্নান করানোর জন্য ভোর চারটে থেকে সাতটা পর্যন্ত সময় লাগছিল। মাতারার স্নান দেখতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য মূল মন্দিরের গেট খুলতে সময় লাগত। তারাময়বাবুর কথায়, ‘‘সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য মন্দিরের গেট খুলতে সকাল সাড়ে ছ’টা থেকে সাতটা বেজে যেত। এর ফলে মন্দির চত্বরে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ লাইন পড়ত। আগামী ১ মাঘ থেকে ভোর সাড়ে পাঁচটায় মূল মন্দিরের গেট সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।”

Advertisement

তারাপীঠ মন্দির কমিটির সেবাইত সমিতির অন্যতম সদস্য শ্যামল মুখোপাধ্যায়, তারক চট্টোপাধ্যায়, অমল বন্দ্যোপাধ্যায়, কাঞ্চন চট্টোপাধ্যায়রা জানান, মন্দির কমিটি দীর্ঘ দিন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছিল। গত বছরের নভেম্বর মাসের সাধারণ সভায় স্নানে এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়। তার পিছনে যুক্তি ছিল, এর ফলে মাতারার দর্শনে আসা ভক্তেরা দেড় ঘণ্টা আগে পুজা দিতে পারবেন। একই সঙ্গে দুপুরের ভোগ এবং সন্ধ্যা আরতির ক্ষেত্রেও নিয়ম নীতি মেনে নির্দিষ্ট সময়ে মাতারার সেবা করতে পারবেন সেবাইতরা।

তবে একটি সূত্রের খবর, মাতারার শিলামূর্তি সংরক্ষণের ব্যাপারে মন্দির কমিটির এ বার নজর পড়েছে। কারণ, একই ভাবে বছরের পর বছর স্নান করানোর রীতি চলে আসায় শিলামূর্তির কিছুটা হলেও ক্ষতি হয়েছে বলে অনেকের দাবি। সেই কারণেও মূর্তি সংরক্ষণে উপর জোর দিতে চাইছেন মন্দিরের সেবাইতরা।

তারাপীঠ মন্দিরের সেবাইতদের সাহায্যকারী পুরোহিত বা চটিদারদের জন্য পৃথক পরিচয়পত্রও খুব তাড়াতাড়ি দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। মন্দির কমিটির সেবাইত সমিতির সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের কাছে অনেক সময় সাধারণ দর্শনার্থীরা অভিযোগ করেছেন, মন্দিরে পুজো দিতে এসে তাঁরা পূজারী কিংবা সেবাইতদের দ্বারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। সেই জন্যই এমন ভাবনা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন