ভোগঘর থেকেই মন্দির দর্শন

এখন নাকি ভোল বদলে গিয়েছে তারাপীঠের। কেমন সে বদল? রাত পোহালেই কৌশিকী অমাবস্যা। লক্ষ লক্ষ ভক্ত সামাল দিতে প্রস্তুতি কেমন, খোঁজ নিল আনন্দবাজার।মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগে তারাপীঠ মূল মন্দিরের প্রবেশ পথ ছিল খুব সঙ্কীর্ণ। ফলে মন্দিরে দর্শনার্থীদের দাঁড়িয়ে আরতি দেখতে খুব অসুবিধা হত। বর্তমানে ভোগঘরের ছাদ থেকে মাতারার দর্শন করতে সুবিধা হবে।’’

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

তারাপীঠ শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৯ ০১:২৬
Share:

প্রস্তুতি: সৌরশক্তিতে রান্না হবে মাতারার ভোগ, বসেছে সৌর-প্যানেল। তারাপীঠে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

২০০ বছরেরও বেশি পুরনো তারাপীঠ মন্দিরের ভোগঘর সংস্কারের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। সংস্কার হওয়া নতুন ভোগঘরের নীচের তলায় মাতারার ভোগ রান্না করার জন্য সোলার উনুনও বসানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই রান্নাও শুরু হবে বলে জানিয়েছে মন্দির কমিটির সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায়। বাড়তি পাওনা প্রায় ১৪০০ স্কোয়ারফুট ভোগঘরের ছাদ থেকে কৌশিকী অমাবস্যার সময় মাতারার দর্শন।

Advertisement

মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগে তারাপীঠ মূল মন্দিরের প্রবেশ পথ ছিল খুব সঙ্কীর্ণ। ফলে মন্দিরে দর্শনার্থীদের দাঁড়িয়ে আরতি দেখতে খুব অসুবিধা হত। বর্তমানে ভোগঘরের ছাদ থেকে মাতারার দর্শন করতে সুবিধা হবে।’’ ভোগঘর সংস্কারের কাজ করতে গিয়ে অনেকের বাধা এবং কুসংস্কারকে এড়িয়ে মাতারার মূল মন্দিরকে অক্ষত রেখে যথেষ্ট সাবধানতার সঙ্গে কাজ করতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারামাতা মন্দির কমিটির সেবায়েত তথা তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের।

তিনি বলেন, “শুধু ভোগঘর সংস্কার নয়। তারাপীঠের শ্মশানে দূষণমুক্ত কাঠের চুল্লি এবং বৈদ্যুতিন চুল্লি নির্মাণ সহ শ্মশানে পানীয় জলের ব্যবস্থা থেকে শববাহীদের জন্য শ্মশানে যাওয়ার আলাদা রাস্তা নির্মাণ তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ থেকে করা হয়েছে। শ্মশানে সাধুদের পুনর্বাসনের জন্য সাধুদের স্থায়ী ঘর করে দেওয়া হয়েছে।’’ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এখনকার তারাপীঠ আর গত চার বছর আগের তারাপীঠের মধ্যে অনেক তফাত। চারলেনের রাস্তা হয়েছে। তারাপীঠে ঢোকার আগে সুদৃশ্য তোরণদ্বার নির্মাণ হয়েছে। মনসুবা মোড়ে মেগা তোরণদ্বার নির্মাণের কাজ চলছে। তারাপীঠে আসা পর্যটকদের সুবিধার জন্য যানজট এড়াতে দ্বারকা নদের উপর দ্বিতীয় সেতুও হয়েছে। এর ফলে আগের মতো আর যানজট হয় না। তারাপীঠে আসার জন্য কবিচন্দ্রপুর থেকে দ্বারকা নদের উপরে ‘ফুট ওভার সেতু’ নির্মাণের কাজ চলছে।

Advertisement

মন্দির চত্বরে মার্বেলের মেঝে। তারাপীঠে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

পর্ষদ সূত্রের দাবি, তারাপীঠ থেকে আরামবাগ, দিঘা কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ নিগম থেকে সরকারি বাস পরিষেবা চালু হয়েছে। তারাপীঠে এখন কর্মতীর্থ, সুফল বাংলার মতো প্রকল্প চালু হয়েছে। বিশ্ব বাংলা ঘাট নির্মাণ হয়েছে। দ্বারকা নদের দু’পাড় বাধানোর কাজও হয়েছে। আগামী দিনে তারাপীঠে পৃথক সাবস্টেশন গড়ে তোলার কাজও দ্রুত শুরু হবে। সেই সঙ্গে তারাপীঠে ৫১ পীঠ দর্শনের পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান।

তারাপীঠ মন্দির কমিটিও দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য সম্প্রতি তারাপীঠ মন্দিরের মূল সেবায়েতদের পাশাপাশি তাঁদের সহযোগীদের (ছড়িদার) চিহ্নিত করার জন্য পৃথক পরিচয় পত্র প্রদান এবং তাঁদের গোলাপি রংয়ের জামা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেক সময় মন্দিরে পুজো দিতে এসে ভিড়ের সময় গোলামাল হয়। সেখানে মূল সেবায়েতদের চিহ্নিত করতে অসুবিধা হয়। সেই কারণে আলাদা করতে চার শতাধিক ছড়িদারের পরিচয় পত্র প্রদান করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন