answer sheet

ভিডিয়ো ‘ভাইরাল’, বিতর্কে কলেজ কর্তৃপক্ষ

সরব বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৩৫
Share:

হুড়ার লালপুর মহাত্মা গাঁধী কলেজের বাইরে ডিএসও-র বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগে আটক করা উত্তরপত্র সংশ্লিষ্ট ছাত্রীর ছিঁড়ে ফেলার ভিডিয়ো ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় ‘ভাইরাল’ হওয়ায় শোরগোল পড়েছে পুরুলিয়ায়। হুড়ার লালপুর মহাত্মা গাঁধী কলেজের মঙ্গলবারের ওই ভিডিয়ো বুধবার রাতে ‘ভাইরাল’ হয় (ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি)। তার পরেই পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরের দৃশ্য কোন যুক্তিতে ‘ভিডিয়োগ্রাফি’ করে তা প্রকাশ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। ওই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি করে বৃহস্পতিবার লালপুরের কলেজের গেটে বিক্ষোভ দেখায় এসইউসি-র ছাত্র সংগঠন ডিএসও। সামাজিক মাধ্যমেও অনেকে প্রতিবাদ দেখান। লালপুরের অধ্যক্ষকে ফোন করে প্রতিবাদ জানান পুরুলিয়ার ছাত্রীটির কলেজের অধ্যক্ষাও।

Advertisement

বিকেলে লালপুরের ওই কলেজের অধ্যক্ষকে তলব করে সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ডাকা হয় ছাত্রীটির কলেজের অধ্যক্ষাকেও। দু’জনকে নিয়ে বৈঠক হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক সুবলচন্দ্র দে বলেন, ‘‘লালপুরের কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ছাত্রীটি পরীক্ষাকেন্দ্রে নকল করছিলেন। তাঁর ব্যবহারও ঠিক ছিল না। কিন্তু সে জন্য বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারত। তা বলে পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিডিয়ো কেন ভাইরাল করা হবে?’’

তাঁর আরও সংযোজন: ‘‘এই ভিডিয়ো বাইরের কেউ তোলেননি। যাঁরা ভিতরে ছিলেন, তাঁদেরই কেউ তুলে থাকবেন। কেন তুলবেন? সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষের কাছে স্পষ্ট জবাব মেলেনি। কলেজ কর্তৃপক্ষকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত করে যাঁরা যুক্ত তাঁদের চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। দ্রুত কলেজের কাছ থেকে এই মর্মে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

ওই ছাত্রীর কলেজের অধ্যক্ষা ইন্দ্রাণী দেব বলেন, ‘‘আমাদের কলেজেও অন্য কলেজের ছাত্রেরা পরীক্ষা দেয়। নকল করতে দেখে ধরা হলেও কারও ছবি তো আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দিইনি। এর ফলে, ছাত্রীটি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।’’

লালপুর মহাত্মা গাঁধী কলেজের অধ্যক্ষ শান্তি কুণ্ডু বলেন, ‘‘যা ঘটেছে, তা সমর্থনযোগ্য নয়। প্রাথমিক ভাবে জেনেছি, ওই ঘরে সে সময় পরীক্ষাগ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন পাঁচ জন। কে ভিডিয়ো করেছেন, কী ভাবে ছড়াল তা তদন্ত করার জন্য কমিটি গঠন করা হচ্ছে।’’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, পুরুলিয়ার কলেজগুলিতে এখন প্রথম ও তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা চলছে। ওই ছাত্রী প্রথম বর্ষের। এ দিন বাড়িতে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মা বলেন, ‘‘আমার মেয়ে যদি কোনও দোষ করে থাকে, তা হলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারতেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার ভিডিয়ো চারদিকে ছড়িয়ে দেওয়া হল কেন? এ দিন পরীক্ষা থাকলেও মেয়ে যায়নি।’’

সরব বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনও। ডিএসও-র জেলা সম্পাদক বিকাশরঞ্জন কুমারের দাবি, ‘‘ওই ভিডিয়ো তোলা এবং তা ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার দায় কোনও ভাবেই পরীক্ষাগ্রহণের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকেরা এড়াতে পারেন না। তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’’ টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি কিরীটী আচার্য দাবি করেন, ‘‘ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে জানিয়েছি। ছাত্রীটির পরিবার আইনি সহায়তা চাইলে, আমরা পাশে দাঁড়াব। সবাইকে ওই ভিডিয়ো মুছে ফেলতে অনুরোধ করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন