প্রতীকী ছবি।
২৪ ঘণ্টা পেরলেও লাভপুরে স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনের কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। তা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে নিহতের পরিবার, এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে নিজের ঘরে খাটের নীচে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বিপ্রটিকুরী গ্রামের স্বর্ণ ব্যবসায়ী বছর পঞ্চাশের বিপদতারণ সিংহের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। বিপ্রটিকুরী গ্রামে স্বর্ণকারপাড়ায় দোতলা পাকা বাড়ি বিপদতারণবাবুর। বাড়ি থেকে মিনিট পাঁচেক দূরে বাসস্ট্যান্ডের কাছে তাঁর সোনার গয়নার দোকান। তাঁর দুই মেয়ে। পায়েল আর পূজা। পায়েলের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। পূজা বোলপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। পূজা, স্ত্রী নমিতাদেবী আর বৃদ্ধা মা বছর আশির উষারানিদেবীকে নিয়ে বিপদতারণবাবুর সংসার ছিল।
পুলিশ জানায়, প্রতি দিনের মতোই মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগদ দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরেন বিপদতারণবাবু। রাত ১০টায় একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়ার পরে শুতে যান সকলে। মেয়েকে নিয়ে দোতলায় থাকেন নমিতাদেবী। নিচের তলায় পাশাপাশি ঘরে থাকতেন উষাদেবী এবং বিপদতারণবাবু। উষাদেবী কানে শুনতে পান না।
বুধবার সকালে ঘুম থেকে উঠে নমিতাদেবী দেখেন সদর দরজার তালা খোলা। খোলা স্বামীর ঘরের দরজাও। ঘরে ঢুকে স্বামীকে হাত পা অবস্থায় খাটের নীচে পড়ে থাকতে দেখে মেয়েকে ডাকেন তিনি। তারপর খবর পেয়ে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। দেহের বিভিন্ন স্থানে ছড়ে যাওয়ার দাগ ছাড়া বড় আঘাতের চিহ্ন ছিল না। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, চুরি করতে আসা দুষ্কৃতীদের চিনে ফেলায় শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে। কানে শুনতে না পাওয়ায় পাশের ঘরে থাকলেও উষারাণীদেবী কিছু টের পাননি।
পূজা এ দিন জানায়, তাঁর বাবার উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছিল। সে জন্য তাঁকে ঘুমের সময় শোওয়ার ঘরের দরজা খুলে রাখতে বলেছিলেন নমিতাদেবী। প্রতি দিন তা-ই করতেন বিপদতারণবাবু। পুলিশের সন্দেহ, দুষ্কৃতীরা সেই সুযোগই কাজে লাগায়। কোনও ভাবে সদর দরজার তালা খুলে ওই ব্যবসায়ীর ঘরে ঢোকে। তার পরে আলমারি খুলে সোনাদানা, নগদ টাকা বের করে নেয়। বিপদতারণবাবু তাদের চিনে ফেলায় তাঁকে খুন করে পালায়। নিহতের ভাগ্নে দিলীপ পাত্র বলেন, ‘‘পুলিশকে তথ্য দিয়ে সমস্ত রকম সহযোগিতা করা হলেও এখনও খুনের কিনারা হয়নি। হতাশ হয়ে পড়েছি। দ্রুত দুষ্কৃতীদের শাস্তি চাই।’’ পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় বিভিন্ন সূত্র ধরে দুষ্কৃতীদের খোঁজার চেষ্টা চলছে। কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। এ দিন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই দেহের ময়না তদন্ত করা হয়েছে।