জঙ্গলে শালপাতা, মাশরুম তুলতে ঢুকে দলছুট হয়ে পড়েছিলেন। সেই সময়ে একা পেয়ে ছ’জন তাঁকে গণধর্ষণ করেছে বলে পুলিশে অভিযোগ করলেন বছর তিরিশের বধূ। বুধবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে মহম্মদবাজারের উদয়ডিহি গ্রাম সংলগ্ন জঙ্গলে। বীরভূমের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘ওই বধূর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সিউড়ি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’’ হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে অত্যাচারের প্রমাণ মিলেছে।
গত শুক্রবারই এই জেলার পাড়ুইয়ে কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেফতার করা হয় পাঁচ জনকে। পুলিশ সূত্রের খবর, পাড়ুইয়ের মতোই মহম্মদবাজারের ঘটনাতেও নির্যাতিতা এবং অভিযুক্তদের সকলেই আদিবাসী জনজাতির। প্রত্যেকেরই বয়স ২৪ থেকে ২৬ এর মধ্যে। পুলিশ জানায়, ধৃতেরা হল আনন্দ সরেন, বাবলু সরেন এবং বাবুরাম মুর্মু। এ দিন সিউড়ি এসিজেএম আদালতে হাজির করানো হলে ধৃতদের তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম সৌম্য চট্টোপাধ্যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা বধূর বাপের বাড়ি মহম্মদবাজারের ভূতুড়া পঞ্চায়েত এলাকায়। ঝাড়খণ্ডে বিয়ে হলেও দুই সন্তান, স্বামীর সঙ্গে বাপের বাড়িতে থাকেন। বুধবার সকালে গ্রামেরই আরও ছয় মহিলার সঙ্গে উদয়ডিহি জঙ্গলে গিয়েছিলেন। পুলিশকে নির্যাতিতা জানিয়েছেন, দুপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে খাওয়ার পরে আবার যখন জঙ্গলে ঢোকেন, তখনই দলের অন্য সদস্যদের থেকে আলাদা হয়ে যান।
অভিযোগ, সেই সুযোগে মদের আসরে থাকা ছয় যুবক অত্যাচার চালায়। বেশ কিছু সময় পরে কোনও রকমে জঙ্গল লাগোয়া খয়রাডিহি গ্রামের কাছাকাছি পৌঁছলে খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করে মহম্মদবাজার পুলিশ।
এ দিকে, প্রকৃত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়নি, এই দাবিতে এ দিন মহম্মদবাজার থানায় জমায়েত করে আদিবাসী জনজাতির কয়েক জন। আদিবাসী গাঁওতার নেতা সুনীল সরেন বলেন, ‘‘নির্দোষ কয়েকজনকে ধরেছে পুলিশ। আমরা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।’’ সে ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছে পুলিশ।