অনাস্থার তলবি সভায় কংগ্রেসের পুরপ্রধানের কুর্সি হারানোর দিনেই শব্দ-সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঝালদার পুরপ্রধান মধুসূদন কয়ালের অভিযোগ, ‘‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত বাড়ির সামনে নাগারে শব্দবাজি ফাটানো হয়েছে।’’ পুরপ্রধানের নামে গালিগালাজ করা হয় বলে অভিযোগ।
এমন কাণ্ডের পরে অস্বস্তিতে পড়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। ঝালদা শহর তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস সেন মনে করেন, ‘‘আনন্দ করে কর্মী-সমর্থকেরা বাজি ফাটাতে পারেন। কিন্তু, এমন ঘটনা কখনই কাম্য নয়।’’ তবে শব্দ-সন্ত্রাস নিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি সদ্য প্রাক্তন পুরপ্রধান।
পুরপ্রধান অনাস্থার অপসারিত হয়েছেন— সন্ধ্যার দিকে এই খবর বাইরে বেরোতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। এরপরে পুরসভা চত্বর থেকে বেরিয়ে রাঁচি-পুরুলিয়া রাস্তা দিয়ে বাজি ফাটাতে ফাটাতে কর্মী-সমর্থকদের একাংশ পুরাতন থানার সামনে দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হন। সেখানেও বেশ কিছুক্ষণ বাজি ফাটানো চলে। তার জেরে কিছুক্ষণ যান চলাচলও ব্যহত হয়। তার পরেই কিছু দলীয় কর্মী-সমর্থক নয় নম্বর ওয়ার্ডের পোদ্দার পাড়ায় মধুসূদন কয়ালের বাড়ির সামনের চলে যান। শুরু হয় নাগারে শব্দবাজি ফাটানো। সঙ্গে ছিল টিপ্পনি, গালিগালাজ। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, সত্তর ছুঁই ছুঁই কংগ্রেস নেতাকে উদ্দেশ্য করে তুই-তোকারি করে গালিগালাজ করা হয়। মধুসূদনবাবু সে সময় বাড়িতে ছিলেন না। অনাস্থার প্রশ্নে নিজের দায়ের করা মামলার শুনানি ছিল বলে তিনি এ দিন কলকাতায় গিয়েছিলেন।
গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত মদুসূদনবাবু। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এটা কি রাজনৈতিক শিষ্টাচার?’’ তাঁর ছেলে বিপ্লব কয়াল বলেন, ‘‘আমি সেই সময় বাড়িতে ছিলাম না। ফোনে জানতে পারি বাড়ির সামনে তৃণমূলের ছেলেরা দেদার পটকা ফাটাচ্ছে। দ্রুত বাড়ি পৌঁছে জ্বলন্ত পটকা বাড়ির দিকে ছুঁড়ে দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে গালিগালাজ! এটা কি ধরনের বিজয়োল্লাস বলতে পারেন?’’ তৃণমূল নেতৃত্বকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন বিদায়ী বোর্ডের কংগ্রেসের উপপুরপ্রধান মহেন্দ্রকুমার রুংটা।
বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে বুঝে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন তৃণমূল নেতারাও। ‘‘কারা বাজি ফাটিয়েছেন, খোঁজ নেব’’— বলছেন শহর তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস সেন। একই আশ্বাস জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য নবেন্দু মাহালিরও।