Snehasis Chakraborty

ধর্নামঞ্চ থেকে অব্যাহত আক্রমণ

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো স্বীকৃতি ফলকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম ফেরানোর দাবিতে শান্তিনিকেতনের হস্তশিল্প মার্কেটে গত দু’দিন ধরে তৃণমূলের ধর্না অবস্থান চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:২৮
Share:

ধর্নামঞ্চে বক্তব্য পেশ করছেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। রবিবার শান্তিনিকেতনে। —নিজস্ব চিত্র।

বিশ্বভারতীতে ফলক বিতর্ক নিয়ে শান্তিনিকেতনে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। রবিবারও সেই ধর্নামঞ্চ থেকে একযোগে উপাচার্যকে আক্রমণ করতে দেখা গেল তৃণমূলে নেতা, মন্ত্রীদের। এ দিনই আবার বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও ফলকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম না থাকার সমালোচনা করেন।

Advertisement

শুভেন্দু বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীর ফলক থেকে রবি ঠাকুরের নাম উধাও প্রসঙ্গে, ‘‘এটা হতে পারে না। এত জেদা জেদি কিসের জন্য! যদি না হয়ে থাকে তাহলে করে নিতেই হবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বাদ দিয়ে বিশ্বভারতীতে কিছু হতেই পারেনা। অতএব জেদ ধরে কোন লাভ নেই। সংশোধন করে নিতেই পারেন।’’

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো স্বীকৃতি ফলকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম ফেরানোর দাবিতে শান্তিনিকেতনের হস্তশিল্প মার্কেটে গত দু’দিন ধরে তৃণমূলের ধর্না অবস্থান চলছে। রবিবার সেই আন্দোলনে যোগ দেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বোলপুরের সাংসদ আসিত মাল, তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, তৃণমূল নেতা আব্দুল করিম খান, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিশ্বভারতী ইউনিটের সভানেত্রী মীনাক্ষী ভট্টাচার্য-সহ অনেকেই।

Advertisement

এ দিনও উপাচার্যকে হুমকি দিয়ে তৃণমূল নেতা গদাধর হাজরা বলেন, “ফলক যদি না সরান তা হলে আগামী দিনে আপনার বাড়ি ঘেরাও করে আপনাকে বের হতে দেব না।” যদিও বিশ্বভারতীর তরফে এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

এখানেই এ দিন বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আজ বেঁচে থাকলে সবচেয়ে বেশি বেদনায় দীর্ণ হতেন। যিনি আজকে উপাচার্য হিসেবে এখানে আছেন, তিনি রবীন্দ্রনাথের ভাবনায় ভাবিত নন, রবীন্দ্র অনুরাগী নন, তাই আজ প্রতিনিয়ত বিশ্বভারতী কলুষিত হচ্ছে। তার প্রভাব এসে পড়ছে শান্তিনিকেতনে।” বিশ্বভারতী থেকে রবীন্দ্রনাথের নোবেল পদক চুরি প্রসঙ্গ টেনে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “সিবিআই প্রতি দিন পশ্চিমবঙ্গের রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ায়। সেই সিবিআই দায়িত্ব নিয়েছিল রবি ঠাকুরের চুরি যাওয়া নোবেল পদক উদ্ধারের জন্য। উদ্ধার তো করতেই পারেনি, উদ্ধার করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে এই বলে তদন্ত সমাপ্ত করে দিয়েছে।’’

পরিবহণমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘বামফ্রন্ট সরকারের সময় বিশ্বভারতীতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পাওয়া নোবেল পদক হারিয়ে গিয়েছিল। আর আজকে বিজেপি সরকারের আমলে বিশ্বভারতী থেকে রবীন্দ্রনাথ হারা করার দেওয়ার চেষ্টা চলছে।”

যদিও সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘বাম আমলে চুরি হয়েছিল এটা ঠিকই। কিন্তু তখন বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবিতেই তো সিবিআই তদন্ত শুরু হয়েছিল।’’

অন্য দিকে, বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘যা করেছেন উপাচার্য করেছেন। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। এটা তৃণমূলকে বুঝতে হবে।’’

এ দিন বিকেলে আন্দোলন মঞ্চে যোগ দেন স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি প্রকল্পের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও বন দফতরের প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। তাঁকেও উপাচার্যের বিরুদ্ধে সুর ছড়াতে দেখা যায়। তৃণমূল সূত্রের খবর সোমবারও তৃণমূলের এই ধর্না অবস্থান চলবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন