বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র
উত্তরদাতা নেই! তাই আপাতত ‘রেকর্ড’ রাখার উপায়ও নেই।
রামপুর ও গণপুর, বীরভূমের ১৬৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে এই দুই জায়গায় আপাতত অঞ্চল সভাপতি নেই শাসকদল তৃণমূলের। তাই লোকসভা ভোটের আগে কর্মিসভায় ঘুরে ঘুরে ‘লিড’ লিখিয়ে নেওয়ার যে চল হালফিলে জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল চালু করেছেন, তা মহম্মদবাজার ব্লকের এই দুই জনপদে এসে থমকে গিয়েছে। বুধবার মহম্মদবাজারে কর্মিসভা করেন অনুব্রত। অন্য ব্লকের মতো এখানেও বুথ ও অঞ্চল সভাপতিদের ডেকে লোকসভা ভোটে সম্ভাব্য ‘লিড’-এর হিসাব নেন। কিন্তু, রামপুর ও গণপুরে দলের কোনও অঞ্চল সভাপতি না থাকায় ওই দুই জায়গার ‘লিড’-এর হিসাব ওঠেনি জেলা সভাপতির খাতায়।
পঞ্চায়েত ভোটে ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের মল্লারপুর ১ এবং মহম্মদবাজার ব্লকের গণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে বিজেপি। ৩-৩ আসনে টাই হয়ে থাকা রামপুর পঞ্চায়েত নিয়েও কম টানাপড়েন হয়নি। তৃণমূল সূত্রেই খবর, তার জেরে ভোটের পরে সব দায়িত্ব থেকে বসিয়ে দেওয়া হয় রামপুরের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি রাকেশ মণ্ডলকে। ব্লক তৃণমূল সভাপতি তাপস সিংহ সে সময় বলেছিলেন, ‘‘অঞ্চল সভাপতির জন্যই রামপুর পঞ্চায়েতে আমাদের এমন হাল।’’ গণপুর পঞ্চায়েতে অবশ্য সাতটি আসনের মধ্যে বিজেপি জিতেছিল ছ’টি আসনেই। একটিতে জেতে তৃণমূল। সেখানেও বেশ কিছু সমস্যা থাকার জন্য সরিয়ে দেওয়া হয় অঞ্চল সভাপতিকে। তাই এমন অবস্থা। তাপসবাবু বলছেন, ‘‘আমাদের ওই দু’টি অঞ্চলে অঞ্চল সভাপতি নেই। তবে আমরা জেলা সভাপতিকে জানিয়ে দিয়েছি, ওই দুটি অঞ্চলেই ভাল লিড দেব।’’
এ কথা জেনে বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য ফণীরঞ্জন রায়ের কটাক্ষ, ‘‘লোকসভা ভোটে লিডের প্রশ্নে তৃণমূলের নেতারা যে যেখানে যে সংখ্যাই বলুন না কেন, রামপুর আর গণপুরে তৃণমূলের লিড কত হবে, তা বলার মতো লোকই নেই! আগামী দিনে আরও কিছু এলাকায় তৃণমূলের এমন হাল হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’’ তার জবাব দিয়েছেন মহম্মদবাজার ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি কালীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর টিপ্পনী, ‘‘আসলে বিজেপির নেতারাই দিবাস্বপ্ন দেখছেন। গোটা ব্লকে একটি পঞ্চায়েত পেয়ে মনে করছে তারা পুরো মহম্মদবাজারই দখল করে নিয়েছে!’’
তবে, অঞ্চল সভাপতির অভাবের বিষয়টি নিয়ে জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। বুধবারই মহম্মদবাজারের সভায় অনুব্রত নির্দেশ দেন, ‘‘ভোটের আগেই যেন এই দুই অঞ্চলে অঞ্চল সভাপতি ঠিক করে দেওয়া হয়।’’ সেই দায়িত্ব তিনি
দিয়েছেন জেলার সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ ও মলয় মুখোপাধ্যায় এবং মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তৃণমূল সূত্রের খবর, সেই মতো তৎপরতাও শুরু হয়ে গিয়েছে।