‘আদি ও নব্য’, দ্বন্দ্ব তৃণমূলে 

অন্য পক্ষের প্রশ্ন, কেন দলে ব্রাত্য করে রাখা হবে পুরনোদের? লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের মধ্যে নব্য বনাম আদির সংঘাতে সরগরম রঘুনাথপুর।

Advertisement

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৯ ০১:১৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক পক্ষ চাইছেন, নতুনদের নিয়ে তৈরি হোক নির্বাচনী কমিটি। অন্য পক্ষের প্রশ্ন, কেন দলে ব্রাত্য করে রাখা হবে পুরনোদের? লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের মধ্যে নব্য বনাম আদির সংঘাতে সরগরম রঘুনাথপুর।

Advertisement

পঞ্চায়েত নির্বাচনে রঘুনাথপুর ব্লকে কার্যত ভরাডুবি হয়েছিল শাসকদলের। বেশ কিছু পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জিতেছিল বিজেপি। পরে বিজেপির জয়ী সদস্যদের একাংশ তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েতের মধ্যে পাঁচটি পঞ্চায়েত ও সমিতিতে বোর্ড গঠন করে তৃণমূল। পঞ্চায়েত ভোটের ফলে দেখা গিয়েছে, ব্লকের জেলা পরিষদের দুই আসনে তৃণমূলের থেকে বিজেপি পাঁচ হাজার ভোট বেশি পেয়েছিল।

লোকসভার ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরের হাত থেকে রঘুনাথপুর পনরুদ্ধার করতে চায় তৃণমূল। কিন্তু তাতে বাধ সেধেছে দলের অন্দরে চোরাস্রোত। যদিও রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ির দাবি, ‘‘দলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই।’’

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের খবর, রবিবার নির্বাচনী কমিটি গঠনের সভায় অনুপস্থিত ছিলেন দলের গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন জেলা পরিষদের প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ হাজারি বাউরী, প্রাক্তন ব্লক সভাপতি প্রদীপ মাজি, প্রাক্তন যুব নেতা মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁদের সমর্থকেরা। সূত্রের খবর, সভার আহ্বায়ক ব্লক তৃণমূলের কার্যকরি সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সদস্য অনাথবন্ধু মাজির উপর ক্ষুব্ধ বৈঠকে অনুপস্থিত তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের প্রশ্ন, ব্লকে এখন কোনও কমিটি নেই। তারপরেও অনাথবন্ধুবাবু সভা ডাকেন কোন অধিকারে? অনাথবন্ধুবাবুর জবাব, ‘‘সভার ঘোষনা আগেই বিধায়ক করেছিলেন। আমি কার্যকরী সভাপতি হিসাবে শুধু সভা পরিচালনা করেছি।’’

পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের ভরাডুবির পর দলীয় নেতৃত্ব ব্লকের সভাপতি কৃষ্ণ মাহাতোকে পদ থেকে সরিয়ে কমিটি ভেঙে দিয়েছিলেন। ব্লকে এখন কোন কমিটি নেই বলে দাবি নেতৃত্বের একাংশের। তারপরেও অনাথবন্ধুবাবু সভা ডাকায় ক্ষুব্ধ ওই অংশের তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

হাজারি বাউরী বলেন, ‘‘আমাদের মতো পুরনো কর্মীদের দলে ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে। দাবি জানানো হলেও নতুন ব্লক কমিটি তৈরি করা হচ্ছে না। চাইলেও আমাদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছেনা। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে অন্য দল থেকে আসা লোকজনদের।”

মুকুলবাবুর অভিযোগ, ‘‘দলের শীর্ষ নেতৃত্ব পুরনো নেতা-কর্মীদের গুরুত্ব দিতে বলছেন। কিন্তু অনাথবন্ধুবাবু সম্পূর্ণ উল্টো পথে হাঁটছেন। অন্য দল থেকে আসা লোকজনদের মাথায় বসাচ্ছেন।” এদিকে পূর্ণচন্দ্রবাবুর বক্তব্য, ‘‘নির্বাচনী কমিটিতে নতুন নেতাকর্মীদের সামিল করার প্রক্রিায়া শুরু হয়েছে।’’ যার প্রেক্ষিতে হাজারীবাবুদের প্রশ্ন ‘‘তাহলে আমরা কী দোষ করলাম। কেন আমরা গুরুত্ব পাব না।’’ সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটের সময় রঘুনাথপুরে নেতৃত্ব দেওয়া তৃণমূল নেতাদের নির্বাচনী কমিটিতে রাখতে চাইছেন না অনেক নেতা। এই নিয়েই দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। অবশ্য এই নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্যে নারাজ দলের কোনও নেতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন