দলের কর্মীদের হাতেই নিগ্রহীত হলেন জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শ্যামল সরকার। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।
শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রাইপুরে যে কী মাত্রা নিয়েছে, রবিবার তা দেখে গেলেন তৃণমূলের যুব সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
দলের নিহত ব্লক কার্যকরী সভাপতি অনিল মাহাতোর পরিবারকে ধানঘরি গ্রামে সমবেদনা জানিয়ে গাড়িতে ওঠার সময়েই অভিষেকের সামনে দলেরই কিছু কর্মীর কাছে মার খেতে হল পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শ্যামল ওরফে বেণু সরকারকে। এমনিতেই বৃহস্পতিবার রাতে মটগোদায় দলের অফিসের বাইরে তিন দুষ্কৃতীর ছোড়া গুলিতে অনিলবাবু খুনের পর থেকেই তেতে রয়েছেন তাঁর অনুগামীরা।
তাঁকে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোকেরা খুন করেছে বলে অভিযোগ তুলে পুলিশ কেন এতদিনেও দোষীদের গ্রেফতার করেনি সে নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে স্থানীয় মানুষজন ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে। অভিষেককে তা জানাতে অনিলবাবুর বাড়ির বাইরে ভিড় করেছিলেন তাঁরা। অভিষেক ফেরার জন্য গাড়িতে ওঠার সময় সেখানে আসেন অনিলবাবুর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোক বলে পরিচিত শ্যামলবাবু।
তাঁকে দেখেই তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। তাঁরা চিৎকার করে বলে ওঠেন, ‘‘এই খুনি। এখন নাটক করতে এসেছে।’’ শ্যামলবাবুকে ধরে কয়েকজন কিল, ঘুঁষি মারতে শুরু করে বলে অভিযোগ। সেই মুহূর্তে ঘটনাস্থলে ছিলেন কয়েকশো তৃণমূল কর্মী। পরিস্থিতি দেখে হতভম্ব হয়ে যান তৃণমূল নেতারাও। পুলিশকর্মারা কোনওরকমে শ্যামলবাবুকে ভিড় থেকে টেনে বের করে নিয়ে যান। অভিষেককেও তাঁর দেহরক্ষীরা গাড়িতে বসিয়ে বের করে আনেন কোনও রকমে।
দলের জেলা নেতা তথা বাঁকুড়ার সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘শ্যামলকে তো মারধর করা হয়নি। ভিড় হয়ে গিয়েছিল বলে কর্মীরা ওঁকে রাস্তায় আটকে দেন।’’ শ্যামলবাবু অবশ্য বলেছেন, ‘‘যা বলার দলকেই জানাব।’’ তবে এলাকার তৃণমূল কর্মীদের অনেকেই বলছেন, দলে আগেই রাইপুরের কোন্দল নিয়ে কড়া হলে হয়তো এই দিনটা দেখতে হতো না।