দল বিরোধী কাজে জড়িত থাকা এবং শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধে জেলা স্তরের এক নেতাকে শো-কজ করল তৃণমূল। বান্দোয়ানের ঘটনা। তৃণমূলের বান্দোয়ান ব্লক সভাপতি রঘুনাথ মাঝি সম্প্রতি বান্দোয়ানের আগুইবিল গ্রামের বাসিন্দা জেলা কমিটির সদস্য অমলেন্দু মাহাতোকে দল বিরোধী কাজে জড়িত থাকা ও দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধে দলীয় প্যাডে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন।
অমলেন্দুবাবু আগে কংগ্রেস করতেন। পরে তৃণমূলে যোগ দেন আগুইবিল হাইস্কুলের প্রাক্তন প্রধানশিক্ষক। রঘুনাথ মাঝি’র দাবি, ‘‘বিভিন্ন সময়ে অমলেন্দুবাবু দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি করেছেন এবং দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে দলবিরোধী কার্যকলাপে মদত দিয়েছেন। পদ এবং বয়সের কথা বিবেচনা করে তাঁকে কয়েকবার সতর্কও করা হয়েছে। কিন্তু তাতে তিনি আমল দেননি।’’
দলের বান্দোয়ান ব্লক যুব সভাপতি জগদীশ মাহাতো বলেন, ‘‘অমলেন্দুবাবু চিরুডি অঞ্চলের বাসিন্দা। পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের বিরাট সাফল্যের পর ব্লক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চিরুডি পঞ্চায়েতে প্রধান হিসেবে আমরা যাঁকে মনোনীত করেছিলাম তিনি তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করে দলের সদস্যদের একটা অংশকে ওই পদের দাবিদার হিসেবে পাল্টা খাড়া করেছিলেন। তৃণমূলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য থাকলেও দুই গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই বাধিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। শেষ অবধি ব্লক কমিটি মনোনীত ব্যক্তিই প্রধান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ ছাড়াও, এলাকায় রেশন ডিলার হিসাবে তাঁর স্ত্রীর নাম মনোনীত করে জেলায় পাঠিয়েছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তাঁর দল বিরোধী কাজ নিয়ে জেলা সভাপতিকেও অবহিত করা হয়েছে।’’ রঘুনাথ মাঝি এবং জগদীশ মাহাতোদের মতে, ‘‘সংগঠন টিকিয়ে রাখতে গেলে অনুশাসন প্রয়োজন। যত বড় নেতা হোক না কেন, তিনি দলের ঊর্ধ্বে নন। দলের কথা ভেবে তাঁর কাজের জবাব চাওয়া হয়েছে।’’ রঘুনাথবাবু জানিয়েছেন, অমলেন্দুবাবুর সাঙ্গে দলের অঞ্চল সভাপতি এবং কৃষক সংগঠনের এক নেতাকেও শো-কজ করা হয়েছে। জেলা সভাপতিকে জানিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কী বলছেন অমলেন্দুবাবু। বললেন, ‘‘আমি জেলা কমিটির সদস্য। আমার কাজের কৈফিয়ত চাওয়ার অধিকার ব্লক কমিটির নেই। এ জন্য শো-কজের জবাবও দেব না।’’ দল বিরোধী কাজের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বান্দোয়ানে তৃণমূল দল গঠন করার অন্যতম কারিগর আমি। ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির অভিযোগ মিথ্যা।’’
তৃণমূলের এই কাজিয়ায় সিপিএমের জোনাল কমিটির সম্পাদক উপেন্দ্রনাথ হাঁসদার কটাক্ষ, ‘‘ওই দলে কে যে নেতা বোঝা মুশকিল।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো অবশ্য এই ঘটনাকে তেমন গুরুত্ব দিতে রাজি নন। তাঁর কথায়, ‘‘দলে এমন একটু-আধটু হয়েই থাকে। দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসলেই সব মিটে যাবে।’’