বিরোধী নেতা-কর্মীরা দলে দলে যোগ দিচ্ছেন তৃণমূলে। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যকে বিরোধীশূন্য করতে উঠে পড়ে লেগেছে শাসকদল। এমনই এক আবহে নলহাটির একটি হাইমাদ্রাসার অভিভাবক প্রতিনিধির ভোটে বাম ও কংগ্রেস সমঝোতা করে ধরাশায়ী করল তৃণমূল প্রার্থীদের।
রবিবার রাতে গণনার পরে দেখা যায়, ভবানীপুর হাইমাদ্রাসার অভিভাবক প্রতিনিধির ছ’টি আসনেই জয়ী হয়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থীরা। গত বার বামেরা একক ভাবে ওই স্কুলের পরিচালন সমিতি দখল করেছিল। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় দলের প্রার্থীদের এমন হারে অস্বস্তিতে পড়েছেন এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব। যার পরে তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি তথা রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহও বলছেন, ‘‘নলহাটি ২ ব্লক এলাকায় সংগঠন বাড়ানো নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।”
ঘটনা হল, স্কুলটি স্থানীয় বারা ২ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। যে পঞ্চায়েত এখনও সিপিএমের দখলে। বামেদের দখলে রয়েছে সংশ্লিষ্ট নলহাটি ২ পঞ্চায়েত সমিতিও। আবার গত বিধানসভা ভোটে এলাকার দীর্ঘ দিনের বিধায়ক তথা তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থী অসিত মালকে হারের মুখ দেখতে হয়েছিল। ওই এলাকায় জোট প্রার্থী কংগ্রেসের মিল্টন রশিদের থেকে তিনি প্রায় তিন হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিলেন। সে দিক থেকে দেখতে গেলে বিরোধীরা তাদের ভোট ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে বলেই মনে করছেন জেলার রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। এই পরিস্থিতিতে নলহাটি ২ ব্লক এলাকার সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে ভাবাচ্ছে শাসকদলের নেতৃত্বকে।
সোমবার এলাকার কংগ্রেস বিধায়ক মিল্টন রশিদ বলেন, ‘‘এই জয় মানুষের জয়।’’ অন্য দিকে, জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ তথা সিপিএমের লোহাপুর জোনাল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খাইরুল হাসান অভিযোগ করেন, ‘‘রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোকে ভেঙে দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে, প্রলোভন দেখিয়ে তৃণমূল বিরোধীদের কব্জায় নিয়ে যাচ্ছে। মানুষের ভোটের রায়ে নির্বাচিতদের তৃণমূল জোর জবরদস্তি করে দলে ঢোকাচ্ছে।’’ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা দল ছাড়লেও সাধারণ মানুষ যে তাঁদের পাশে রয়েছেন, ভোটের এই ফলাফল সে দিকেই ইঙ্গিত করছেন বলে খাইরুলের দাবি।
তৃণমূলের রামপুরহাট মহকুমার পর্যবেক্ষক তথা দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্যও মেনে নিয়েছেন, ‘‘বাস্তবিকই ওই এলাকায় আমাদের সংগঠন দুর্বল। দলীয় কর্মীদের একত্রিত করে সংগঠনকে কীভাবে আরও মজবুত করা যায়, দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে নিয়ে এলাকায় বৈঠক করতে হবে।’’