পর্যটকদের আশায় দোকান গোছাচ্ছেন ব্যবসায়ী। নিজস্ব চিত্র।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসায় আবার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুরের হোটেল ও লজগুলি। জুনের মাঝামাঝি নিয়মকানুন মেনে আবার খোলার ব্যাপারে ছাড় মেলে। তবে পর্যটক হচ্ছিল না। চলতি মাসের গোড়ায় অবস্থা কিছুটা ফিরল। সপ্তাহান্তের দু’দিন জলাধারের কাছে কাটিয়ে গেলেন অনেকে।
মুকুটমণিপুর হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ সাহু জানান, সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে পর্যটনকেন্দ্রে প্রায় ১৫টি লজ রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে মে মাসের প্রথম দিক সেগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। নতুন করে খোলার পরে অনেকেই ফোন করে খোঁজ-খবর নিচ্ছিলেন। কিন্তু ঘরের বুকিং হচ্ছিল না।
জুলাইয়ের প্রথম শনি-রবিবার পর্যটনকেন্দ্রের অধিকাংশ হোটেল ও লজেই কমবেশি পর্যটক ছিল বলে জানাচ্ছেন মালিকেরা। একটি বেসরারি লজের মালিক উত্তম কুম্ভকার বলেন, ‘‘শনিবার প্রথম পর্যটক দেখা গেল।’’ তিনি জানান, শনিবার চারটি ঘরে লোক ছিল। তাঁরা রবিবার সকালে চলে গিয়েছেন। অন্য একটি লজের ম্যানেজার সৌমেন চক্রবর্তী জানান, তাঁদের তিনটি ঘর বুকড ছিল। রবিবার সকালে খালি হয়েছে।
হোটেল ও লজগুলির কর্তৃপক্ষের দাবি, সরকারি নিয়ম এবং স্বাস্থ্য-বিধি মেনে থাকার আয়োজন করা হয়েছে। কয়েকটি লজের কর্মীরা জানান, প্রথমেই থার্মাল স্ক্যানারে অতিথিদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। তার পরে, জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে ব্যাগপত্র। হাত স্যানিটাইজ় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে ঘরের চাবি। খাওয়ার পরে প্রতিবার জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে চেয়ার-টেবিল।
মুকুটমণিপুর উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারপার্সন তথা রাজ্যের খাদ্য ও গণবণ্টন দফতরের প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি বলেন, ‘‘ কড়াকড়িতে বেশ কিছু ছাড় দেওয়ার পরে, বাইরে থেকে পর্যটকরা আসছেন। সামাজিক দূরত্ব মেনে থাকতে তাঁদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই বিষয়টিও লজের মালিকদের দেখতে বলা হয়েছে।’’
মুকুটমণিপুর থেকে রবিবার ফিরে যাওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতার এক পর্যটক বলেন, ‘‘কড়াকড়িতে টানা বাড়িতে থেকে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছিল। একঘেয়েমি কাটাতে ঘুরে এলাম।’’ বর্ধমানের রায়না সব্যসাচী বক্সী বলেন, ‘‘করোনা-বিধি মেনে লজগুলিতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা সন্তুষ্ট।’’
তবে মুকুটমণিপুর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য পতিতপাবন সাহুর দাবি, দীর্ঘদিন পরে পর্যটক এলেও তাঁরা বাইরে বেরিয়ে বিশেষ কেনাকাটা করেননি। তিনি বলেন, ‘‘দ্রুত অবস্থা পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে বলে সবাই আশা করছি।’’