কংকালীতলার নতুন সাজে খুশি পর্যটকেরা

এ বছরের ২ জানুয়ারি বর্ধমানের কৃষি খামার মাঠে মাটি উৎসবের সূচনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসেন বোলপুরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০১:৩৬
Share:

সাজগোজ: কংকালিতলায় বাঁধানো হচ্ছে পুকুর। শুক্রবার শান্তিনিকেতনে। নিজস্ব চিত্র

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ও কংকালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের তত্ত্বাবধানে বীরভূমের পাঁচটি সতীপীঠের মধ্যে অন্যতম কংকালীতলা সেজে উঠছে নতুনরূপে। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে সৌন্দর্যায়নের কাজ। তৈরি হচ্ছে বৈদ্যুতিক চুল্লি, অতিথি নিবাস, ক্যাফেটেরিয়া, শৌচালয়।

Advertisement

এ বছরের ২ জানুয়ারি বর্ধমানের কৃষি খামার মাঠে মাটি উৎসবের সূচনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসেন বোলপুরে। বিশ্বভারতী পল্লিশিক্ষা ভবনের মাঠে হেলিকপ্টারে নামেন তিনি। এরপরই সোজা চলে যান কংকালীতলায়। সেখানে পুজো দিয়ে তিনি জানান, একান্নপীঠের পাঁচটি পীঠই রয়েছে বীরভূমে। নলহাটি থেকে শুরু করে বক্রেশ্বর, তারাপীঠ, কংকালীতলা— সব পীঠ নিয়ে ‘সার্কিট ট্যুরিজম’ করা হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য পর্যটনক্ষেত্রগুলিরও উন্নয়ন করা হচ্ছে। একান্নপীঠের আদলে গড়ে তোলা হচ্ছে তারাপীঠ। তারাপীঠ উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করে তারাপীঠের সৌন্দর্যায়ন করা হচ্ছে। একই ভাবে তারকেশ্বর ও কালীঘাটের জন্যও একই রকম পরিকল্পনা রয়েছে। কংকালীতলার উন্নয়নের জন্য ইতিমধ্যেই টাকা দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, কংকালীতলায় মূল পুকুরের (সেখানেই দেবীর কাঁকাল পড়ে, এরকম জনশ্রুতি রয়েছে) সংস্কার করা হবে। তা পুরো বাঁধানো হবে।

কংকালীতলা নিয়ে এই ঘোষণার পরই সেখানকার সাধারণ মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। কারণ এর আগে তাঁদের প্রশ্ন ছিল, তারাপীঠে এত কিছু হলে কংকালীতলায় তেমন উন্নয়ন হচ্ছে না কেন?

Advertisement

এর মধ্যেই বীরভূমের পর্যটনক্ষেত্র হিসেবে তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে কংকালীতলা। যে সব পর্যটক এক-দু’দিনের ছুটিতে শান্তিনিকেতন বেড়াতে আসেন, তাঁরা একবার হলেও কংকালীতলা ঘুরে যান।

এতে অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে টোটোচালকেরা। তাঁরা আরও বেশি করে কংকালীতলার নাম জানিয়ে পর্যটকদের সেখানে নিয়ে যেতেন। এলাকার সৌন্দর্যায়ন হলে পর্যটক সংখ্যা আরও বাড়বে আশা করছেন টোটো ও অন্য গাড়ির চালকেরা।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, কংকালীতলায় সৌন্দর্যায়নের কাজ এগোচ্ছে দ্রুতগতিতে। কংকালীতলা মহাশ্মশানে চলছে বৈদ্যুতিক চুল্লির জন্য ঘর তৈরির কাজ। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০ শতাংশ কাজ হয়েছে। তারাপীঠের পর কংকালীতলাতেই বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরি হচ্ছে। মূল পুকুরটির ধার বাঁধিয়ে বসেছে টাইলস। মন্দির থেকে কিছুটা দূরে আরও একটা পুকুর রয়েছে। সেই পুকুরও বাঁধানো হচ্ছে। মন্দির থেকে কয়েক পা এগিয়েই তৈরি হচ্ছে ক্যাফেটেরিয়া, কাজ প্রায় ৬০ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। ক্যাফেটেরিয়ার পাশেই হচ্ছে শৌচালয়। তারও প্রায় ৫০ শতাংশ শেষ হয়ে এসেছে। কংকালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের পাশেই একটা অংশ পার্কিংয়ের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। পার্কিংয়ের পাঁচিল তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। তৈরি হচ্ছে অতিথি নিবাসও। আপাতত দ্বিতল হওয়ার কথা সেটি, প্রায় ৩০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। মন্দিরে পুজো দেওয়ার উপকরণ বিক্রির জন্য ঢোকার মুখে সারি দিয়ে কয়েকটি দোকান রয়েছে। সেখানে বসেছে হাইমাস আলো। মন্দিরের পাশ দিয়ে গিয়েছে কোপাই নদী। সেই নদীর পাড় বাঁধানো চলছে। গাছ লাগিয়ে পার্ক তৈরি করা যায় কিনা, তারও পরিকল্পনা চলছে। সব মিলিয়ে এখন সাজ সাজ রব।

বর্ধমান থেকে মন্দিরে আসা এক পর্যটক বলেন, ‘‘বছরের বিভিন্ন সময় ইচ্ছে হলেই এখানে চলে আসি। খুব ছোটবেলায় দেখেছি শুধু মন্দির ছিল। এখন এত উন্নয়ন হচ্ছে দেখে ভালই লাগছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন