প্রতীকী ছবি।
এক আদিবাসী বধূকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠল। ওই ঘটনায় বাবা, ছেলে-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খাতড়া থানা এলাকার ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত অশোক সর্দার, ভরত সর্দার ও বাবলু সর্দার খাতড়া থানা এলাকার বাসিন্দা।
মঙ্গলবার তিন জনকে খাতড়া আদালতে তোলা হয়। অশোক ও ভরত দুই ভাই। বাবলু অশোকের ছেলে।
বধূর অভিযোগ, রবিবার সন্ধ্যায় তাঁর স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। সেই সময় পাঁচ জন চড়াও হয়ে দাবি করেন, বধূটি বাড়িতে ভূত পুষেছেন। প্রতিবাদ জানিয়েও কাজ হয়নি। তাঁরা বধূকে মারধর শুরু করেন বলে অভিযোগ। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর স্বামী বাড়িতে ঢুকলে, দুষ্কৃতীরা তাঁকেও মারধর করে বলে অভিযোগ।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। মারধরের ঘটনায় জখম ওই বধূর প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। সোমবার ঘটনাটি নিয়ে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে খাতড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই বধূ। পরে পুলিশ অভিযুক্তদের মধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করে। বাকি দুই অভিযুক্ত পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার বারবার চেষ্টা করেও অভিযুক্তদের পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
উল্লেখ্য, ডাইনি অপবাদ দিয়ে নির্যাতনের প্রতিবাদে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে। তারপরেও যে এই ঘটনা রোখা যাচ্ছে না, খাতড়ার ওই ঘটনাতে তা ফের সামনে এল বলে অনেকে মনে করছেন।
ডাইনি প্রথার বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করার কাজ করেন প্রাক্তন রাজ্য সরকারি কর্মী সনগিরি হেমব্রম। সনগিরিবাবু বলেন, “শিক্ষা থেকে খেলাধূলো সব ক্ষেত্রেই আদিবাসী মানুষজন এগোচ্ছে। কিন্তু তারপরেও কিছু এলাকায় ডাইনি অপবাদ দিয়ে নির্যাতনের ঘটনা রোখা যাচ্ছে না একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তির জন্য। আমরা লাগাতার এর বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছি।”
অনেকের মতে, এ ক্ষেত্রে প্রশাসনেরও আরও সক্রিয় ভাবে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। মহকুমাশাসক (খাতড়া) রাজু মিশ্র পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখে এলাকায় সচেতনতা শিবির করার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।