পরীক্ষা হলে নকল করতে দিতে হবে— এই দাবিতে পরীক্ষার খাতা দীর্ঘক্ষণ নিজেদের হেফাজতে আটকে রাখল পরীক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে রামপুরহাটে একটি বেসকরকারি প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে। খবর পেয়ে প্রতিষ্টানে পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা উপস্থিত থাকলেও পরীক্ষার নামে অবাধে চলে গণ টোকাটুকি। পরীক্ষা শেষ হওয়ার নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার ঘন্টা দু’য়েক পরে পরীক্ষার্থীরা তাঁদের খাতা জমা দেন। বীরভূম ডিএলএড কলেজ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
ঠিক কী হয়েছে এ দিন ওই পরীক্ষাকেন্দ্রে? পুলিশ ও কলেজ সূত্রে খবর, প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণার্থীদের প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের ইংরেজি পরীক্ষা ঘিরে ঘটনাটি ঘটে। এ দিন গুরুকুল বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষন প্রতিষ্ঠানে নলহাটি থানার ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র তপোবন বিদ্যালয়ের ৫০ জন এবং সিউড়ি থানার বীরভূম ডিএল কলেজের ৫০ জন পরীক্ষার্থীর সিট পড়েছিল। পরীক্ষা কেন্দ্রের অফিসার ইনচার্জ মেহেবুব হোসেন বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীরা অবাধে টুকতে চেয়েছিল তাতে বাধা দেওয়ার জন্য পরীক্ষার্থীরা তাঁদের উত্তরপত্র জমা দিতে চাননি। এবং পরীক্ষা শেষ হওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের দু’ ঘণ্টা পরে উত্তর পত্র জমা দেন।’’ জানা যায়, ওই পরীক্ষাকেন্দ্রে কর্তব্যরত গার্ডদের গালিগালাজ ও হেনস্থা করা হয়। একটি ঘরের টেবিল চেয়ার বেঞ্চ উলটে দেওয়া হয়।
এ দিন দুপুর একটা নাগাদ ওই প্রতিষ্ঠানে পৌঁছালে জানতে পারা যায়, পরীক্ষা কেন্দ্রে টুকতে না দেওয়ার জন্য পরীক্ষার্থীরা তাঁদের উত্তরপত্র নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছেন। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা জানান, এর আগে দু’দিন বই খুলে লিখতে দেওয়া হয়েছে। এ দিন প্রথম থেকেই কড়া গার্ড দেওয়ার জন্য কোনও নকল করার সুবিধা দেওয়া হয়নি। অথচ পরীক্ষার উত্তরপত্র জোর করে নিয়ে নেওয়া হয়েছে। ওই কলেজের অধ্যক্ষ দ্বারিকা নাথ পাল অবশ্য পরীক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রতিবাদ করেন।
ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় রামপুরহাট ব্লকের বিডিও নিতীস বালা আসেন । তিনি পরীক্ষার্থীদের কাছে থাকা উত্তরপত্র জমা দিতে বলেন। কিন্ত পরীক্ষার্থীরা তাঁদের কাছে থাকা উত্তরপত্র জমা না দিয়ে পুনরায় নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে দীর্ঘক্ষণ পরীক্ষাকেন্দ্রে বসে থাকেন। এরমধ্যে ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র তপোবন বিদ্যালয়ের মালিক বিভাষ অধিকারী দাবি করেন, ‘‘গুরুকুলের মালিক পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা চেয়েছিল। পরীক্ষার্থীরা তা না দেওয়ার জন্য এই ঝামেলা।’’
গুরুকুলের মালিক আতিউর রহমান অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। পুরো ঘটনা আমি পর্ষদ সভাপতি এবং মহকুমা প্রশাসনকে মৌখিক ভাবে জানিয়েছি।’’