নতুন পতাকা হাতে। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলে যোগ দিলেন রঘুনাথপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির আরও এক বিজেপি সদস্য। রবিবার রাতে নিতুড়িয়ার সড়বড়িতে তৃণমূলের বিধানসভা অফিসে গিয়ে শাসকদলে যোগ দেন চোরপাহাড়ি পঞ্চায়েত থেকে জেতা সমিতির বিজেপি সদস্য প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন চোরপাহাড়ির বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য নেহা মাঝিও। দু’জনের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়েছেন বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ি।
রঘুনাথপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদ তফসিলি জনজাতির মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। নির্বাচনে শুধু তৃণমূলেরই এক জন তফসিলি জনজাতির জয়ী মহিলা সদস্য রয়েছেন। সেই প্রেক্ষিতেই রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র দাবি করেছিলেন, সমিতিতে তৃণমূলের সভাপতি হচ্ছে বুঝেই বিজেপির সদস্যরা তাঁদের দলে যোগ দিতে শুরু করেছেন।
বুধবার বোর্ড গঠন হবে রঘুনাথপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতিতে। তার আগে বিজেপির মধ্যে ভাঙন ধরিয়ে ওই সমিতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে নিজেদের তুলে ধরতে জোরকদমে মাঠে নেমেছে শাসকদল। প্রশান্ত বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে ওই সমিতিতে শাসকদলের আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯টি। বিজেপির আসন কমে হয়েছে ১২টি।
তবে বিজেপির অভিযোগ, ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের সদস্যদের নিজেদের দিকে টানছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রঘুনাথপুরে খাজুরা, চোরপাহাড়ি, বাবুগ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের দিনে তৃণমূল কী ভাবে সন্ত্রাস চালিয়েছে সেটা সবাই জানেন। হয় ভয় না হয় প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের সদস্যদের নিজেদের দলে টানছে তৃণমূল।” দলত্যাগী সদস্যেরা দলের প্রতীক ও সংগঠনের জোরে জিতেছেন বলে দাবি বিদ্যাসাগরের। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচিত সদস্যেরা তৃণমূলে গেলেও ওই এলাকায় আমাদের সাংগঠনিক ক্ষতি হচ্ছে না। বরং মানুষের সমর্থন আরও বাড়ছে। লোকসভা ভোটেই সেটা প্রমাণ হয়ে যাবে।”
বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে পূর্ণচন্দ্র বলেন, ‘‘কিছু লোক ভূল বুঝে বিজেপিতে গিয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলই উন্নয়ন করতে পারবে বুঝেই তাঁরা আবার আমাদের দিকে ফিরতে শুরু করেছেন।” বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রশান্ত ও নেহা দাবি করেছেন, এলাকার উন্নয়নের কাজ করতে তাঁরা স্বেচ্ছায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
অন্য দিকে, চোরপাহাড়ি পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য নেহা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রধান হওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছে শাসকদল। চোরপাহাড়িতে ১১টি আসনের মধ্যে ৬টিতে জিতেছিল তৃণমূল। বিজেপি পেয়েছিল ৫টি আসন। ২৭ অগস্ট চোরপাহাড়িতে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে বিস্তর ঝামেলা হয়। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা পঞ্চায়েতের সামনে নির্বিচারে বোমা ফেলায় বোর্ড গঠনের জন্য সেখানে ঢুকতেই পারেননি বিজেপির সদস্যেরা। চোরপাহাড়িতে আবার প্রধান পদটি তফসিলি জনজাতির জন্য সংরক্ষিত। পঞ্চায়েতে সংখ্যগারিষ্ঠতা পেলেও তৃণমূলের কোনও তফসিলি জনজাতির সদস্য সেখানে নেই। সোমবার বোর্ড গঠনে শুধু উপপ্রধান পদে এক জন মনোনীত হয়েছিলেন। এ বার নেহা যোগ দেওয়ায় সেখানে তাঁকেই প্রধান করা হতে পারে বলে তৃণমূল সূত্রের দাবি।