রাস্তা চওড়ার দাবি বিষ্ণুপুরে

ট্রাকের ধাক্কা, শিশু-সহ মৃত দু’জন

কয়লা বোঝাই ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কায় একটি ছোট গাড়ির যাত্রী এক শিশু ও চালকের মৃত্যু হল। জখম হলেন ওই শিশুর পরিবারের চার জন। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার নাগাদ বাঁকুড়া-খড়্গপুর ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে বিষ্ণুপুরের খড়িকাশুলি গ্রামের দুর্ঘটনাটি ঘটে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৭ ০৩:৪৬
Share:

অঘটন: দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই গাড়ি। ছবি: শুভ্র মিত্র

কয়লা বোঝাই ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কায় একটি ছোট গাড়ির যাত্রী এক শিশু ও চালকের মৃত্যু হল। জখম হলেন ওই শিশুর পরিবারের চার জন। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার নাগাদ বাঁকুড়া-খড়্গপুর ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে বিষ্ণুপুরের খড়িকাশুলি গ্রামের দুর্ঘটনাটি ঘটে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হল চার বছরের শিশু সানভি খাণ্ডেলবাল ও গাড়ির চালক প্রদীপ সিংহ (৫৭)। দুর্ঘটনায় মৃত শিশুর মা প্রিয়াঙ্কা খাণ্ডেলবাল ও তার দিদি সংস্কৃতি খাণ্ডেলবালের চোট গুরুতর। সানভির বাবা পরেশ খাণ্ডেলবাল ও তার মামাতো দিদি হানি খাণ্ডেলবাল চোট পেলেও তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল বলেই জানিয়েছে পুলিশ। আহত চার জনকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই পরিবারটি খড়্গপুরের নিউ সেটেলমেন্ট মার্কেট এলাকার বাসিন্দা।

খবর পেয়েই সেখান থেকে তাঁর পরিবারের লোকজন বিষ্ণুপুর ও দুর্গাপুরে এসেছেন। রবিবার সকালে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে মর্গের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন পরেশবাবুর ছোটভাই বিমল খাণ্ডেলবাল। তিনি বলেন, ‘‘পরেশদা পারিবারিক এক অনুষ্ঠানে বৌদি, দুই ভাইঝি ও বৌদির ভায়ের মেয়েকে নিয়ে দুর্গাপুরে এক আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন। শনিবার সন্ধ্যায় তাঁরা সেখান থেকে খড়্গপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কী করে যে এমন হয়ে গেল, বুঝতে পারছি না।’’

Advertisement

এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) লাল্টু হালদার বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে দু’টি গাড়িই নিয়ন্ত্রণহীন গতিবেগে ছিল। দুর্ঘটনার পরে গিয়ে দেখা গিয়েছে ছোট গাড়ির আরোহীরা কেউ সিট বেল্ট ব্যবহার করেননি। ভিলেজ পুলিশের মাধ্যমে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পাশের খড়িকাশুলি গ্রামের বাসিন্দাদের সহায়তাই আহতদের উদ্ধার করে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়।’’ তিনি জানান, ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। চালক ও খালাসি পলাতক।

স্থানীয় খড়িকাশুলি গ্রামের বাসিন্দা জুন্মান খান, অরুণ বিশ্বাস, সুকুর খান বলেন, ‘‘শনিবার দুর্ঘটনার আগে বৃষ্টি হয়। প্রচণ্ড শব্দ পেয়ে ছুটে গিয়ে দেখি, ট্রাক্টটির সঙ্গে ছোট গাড়িটি একেবারে দুমড়ে মুচড়ে সেঁটে গিয়েছে। সবাই মিলে হাত লাগিয়ে আহতদের উদ্ধার করি। কিন্তু ফুট ফুটে বাচ্চাটার কোনও সাড়া ছিল না। খুব খারাপ লাগছে।’’

বাসিন্দাদের বক্তব্য, এই জায়গায় জাতীয় সড়ক হঠাৎ করে চওড়া থেকে সরু হয়ে গিয়েছে। দূর থেকে গাড়ি চালকরা অনেক সময় তা ঠাহর করতে পারেন না। তাই হামেশাই এখানে পথদুর্ঘটনা ঘটছে। তাঁদের দাবি, প্রশাসনের রাস্তার পরিস্থিতির দিকে নজর দেওয়া উচিত।

খড়্গপুর থেকে ব্যববাসী পরেশ খাণ্ডেলবালের পারিবারিক বন্ধু জগদীশ ঝাওয়া বিষ্ণুপুর হাসপাতালে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘খড়্গপুরের একটি মিশনারি স্কুলে কে জি ওয়ানে পড়ত সানভি। পাড়াতে সে খুব জনপ্রিয় ছিল।’’

তাই ওই এলাকার সবাই শোকে যেন পাথর হয়ে গিয়েছেন। সানভির দাদু অনিরুদ্ধপ্রসাদ খাণ্ডেলবাল, দিদা সারদাদেবী শনিবার রাত থেকেই সানভির খোঁজ করে যাচ্ছেন। বয়স্ক মানুষ দু’টিকে সত্যি কথাটা কী ভাবে জানাবেন, ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন