হাতের উল্কি ফেরাল মুন্নাদের

হাতে উল্কি করে লেখা একটা ফোন নম্বর। তারই দৌলতে ওন্দার হোমে ফিরে এল দুই নিখোঁজ আবাসিক। তাদের একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। অন্যজন মূক ও বধির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৭ ০১:২৩
Share:

ফেরা: বাঁকুড়া আদালতে দুই কিশোর। নিজস্ব চিত্র।

হাতে উল্কি করে লেখা একটা ফোন নম্বর। তারই দৌলতে ওন্দার হোমে ফিরে এল দুই নিখোঁজ আবাসিক। তাদের একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। অন্যজন মূক ও বধির।

Advertisement

সবার চোখ এড়িয়ে আবাসিকদের কেউ কেউ প্রায়ই হোমের থেকে বেড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ফিরতে গিয়ে বাধে বিপত্তি। বছর খানেক আগে তাই বাঁকুড়ার শিশু সুরক্ষা আধিকারিক প্রতিবন্ধী আবাসিকদের হাতে উল্কি দিয়ে হোম কর্তাদের মোবাইল নম্বর লিখে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্তে সেই নির্দেশই কাজে এল বলে মনে করছেন ওন্দার কমলা এলাকার শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী হোমের কর্তারা।

ওই হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস দেড়েক আগে সেখান থেকে নিখোঁজ হয়েছিল মুন্না কুমার ও বধূ পান্থ নামে দু’জন। মুন্না মূক ও বধির। বধূ মানসিক প্রতিবন্ধী। ঘটনার পরে ওন্দা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। কিন্তু কোনও হদিস মেলেনি।

Advertisement

দিন দশেক পরেই হোমের কর্তার মোবাইলে ফোন আসে। জানা যায়, মুন্না চেন্নাই শহরের একটি হোমে ও বধূ ওড়িশার বরগড়া জেলার একটি হোমে রয়েছে। নিখোঁজ হয়ে দু’জন কোনও ভাবে দু’টি আলাদা শহরে পৌঁছে গিয়েছিল। সেখানকার পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হোমে পাঠায়। হোম কর্তৃপক্ষ হাতে উল্কি দেখে সেই নম্বরে ফোন করে যোগাযোগ করেছিল।

সোমবার ওন্দা থানার পুলিশের সাহায্যে দু’জনকে উদ্ধার করে বাঁকুড়ায় নিয়ে আসা হয়। বাঁকুড়ার শিশু কল্যাণ কমিটির চেয়ারম্যান মহিনুর আলম বলেন, “ভাগ্যিস হাতে মোবাইল নম্বর লিখে রাখার পদ্ধতি চালু হয়েছিল। না হলে ছেলেগুলির হদিশ পাওয়াই মুশকিল হয়ে পড়ত।” এ দিন উদ্ধার হওয়া দুই আবাসিককে বাঁকুড়া আদালত ওন্দার হোম কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়। আজ, মঙ্গলবার দু’জনকেই বাঁকুড়া শিশু কল্যাণ কমিটির বেঞ্চে পেশ করার কথা।

আর যাঁরা মাথায় এই উল্কির ভাবনা এসেছিল, বাঁকুড়ার সেই শিশু সুরক্ষা আধিকারিক পার্থসারথী মণ্ডল বলেন, “ওরা নিজেদের নাম, ঠিকানা কিছুই বলতে পারবে না। তাই হাতে মোবাইল নম্বর লিখে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কাজে লাগল ভেবে ভাল লাগছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন