তদন্ত চেয়ে অবরোধ স্থানীয়দের

মুরারইয়ের যুবকের রহস্য-মৃত্যু পাকুড়ে

এক যুবকের রহস্য-মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়াল মুরারইয়ের রাজগ্রামে। বুধবার গভীর রাতে ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ের মালপাহাড়ি থানার পিপুলজুড়ি থেকে গুরুতর জখম অবস্থায় ওই যুবককে মুরারই ১ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে জানিয়ে দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মুরারই শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:০০
Share:

Representative Image

এক যুবকের রহস্য-মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়াল মুরারইয়ের রাজগ্রামে। বুধবার গভীর রাতে ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ের মালপাহাড়ি থানার পিপুলজুড়ি থেকে গুরুতর জখম অবস্থায় ওই যুবককে মুরারই ১ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে জানিয়ে দেন। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় (৩৫)। বাড়ি মুরারই থানার রাজগ্রাম পূর্ববাজার এলাকায়।

Advertisement

এ দিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়না-তদন্তের পরে দেহ এলাকায় পৌঁছলে স্থানীয়েরা পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিতে দেহ নিয়ে রাজগ্রাম-বোলপুর রোড এবং রাজগ্রাম হাসপাতাল পাড়া মোড়ের সংযোগস্থলে জড়ো হন। চলে রাস্তা অবরোধ। এলাকায় যান তৃণমূলের স্থানীয় নেতা, বীরভূম জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ প্রদীপ ভকত, তৃণমূলের মুরারই ১ ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষ। পুলিশ অবশ্য জানায়, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা যাবে না। পরে মৃতের ভাই লিখিত অভিযোগ করেন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রহস্যের কিনারা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয়েরা। পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।

ঠিক কী হয়েছে?

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার সকালে বাড়ির বাজার করে বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিকে যাচ্ছি বলে ওই যুবক বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। পরে গভীর রাতে তাঁর ভাই রঞ্জন দাদা ফিরছে না দেখে খোঁজখবর শুরু করেন। পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার রঞ্জন জানান, চন্দনকে মোবাইলে না পেয়ে দাদার বন্ধু রবি খানকে ফোন করি। রবি ফোনে জানান দাদার সঙ্গে দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। মুরারই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রঞ্জনের কথায়, ‘‘তার পরেই খবর আসে দাদা মারা গিয়েছে।’’

রাজগ্রাম রেলগেট এলাকার বাসিন্দা রবি বলেন, ‘‘একটা কাজে বন্ধুরা মিলে মুরারই গিয়েছিলাম। সেখানেই খবর আসে ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ে আমাদের বন্ধু টনি খানের একটি ট্রাক পুলিশ আটক করেছে। তা শুনে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ আমি, চন্দন ছাড়াও আরও দুই বন্ধু মালপাহাড়ি এলাকায় পৌঁছই। সেখানে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে যেতেই আমাদের গাড়ি থেকে নামিয়ে প্রথমে আমাকে, পরে অন্য দুই বন্ধুকে গাড়িতে চাপায়।’’ রবির দাবি, তারই ফাঁক গলে চন্দন গাড়ির গেট খুলে পালিয়ে যায়। কিন্তু, কোন দিকে সে গিয়েছে বুঝতে পারিননি কেউই। এর ৪৫ মিনিট পরে ঝাড়খণ্ড পুলিশ ছেড়ে দিতে বাড়ি ফেরার জন্য চন্দনের খোঁজ শুরু হয়।

রবি পুলিশকে জানিয়েছে, তখনই তাঁরা জানতে পারেন চন্দন পাথর খাদানে নামার পথ ধরে গিয়েছে। খোঁজাখুঁজি শুরু করতেই গুরুতর জখম চন্দনের খোঁজ মেলে। রবির কথায়, ‘‘ওর অবস্থা খুব খারাপ ছিল। তখনও বেঁচে আছে দেখে প্রথমেই চন্দনকে মুরারই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু, বাঁচাতে পারিনি।’’

মায়ের নামে থাকা রেশন দোকান দেখভাল করত চন্দন। দশ বছরের একটি মেয়ে এবং আড়াই বছরের একটি ছেলে আছে তাঁর। চন্দনের পরিবারের দাবি, খাদানে পড়ে গেলে মাথায় এবং শরীরের অন্য জায়গায় যে ভাবে আঘাত থাকার কথা ছিল সে ধরনের আঘাত শরীরে ছিল না। পরিবারের দাবি, এটা পরিকল্পিত খুনের ঘটনা। তবে নির্দিষ্ট কারও নামে অভিযোগ দায়ের হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের কপাল, চিবুক এবং বাম পায়ের নীচের অংশে আঘাতের চিহ্ন আছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন