নলহাটিতে লাঠিপেটা পুলিশের, কারেন্ট যাবে কেন, বিক্ষোভ সাবস্টেশনে

এলাকার ফিডার লাইনকে নলহাটি টাউন ফিডারের সঙ্গে জোড়ার দাবিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নলহাটি শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ০২:০৪
Share:

চলছে বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র।

নামমাত্র বৃষ্টিতে বিদ্যুৎ চলে যায়। অন্ধকার হয়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এই নিয়ে ক্ষোভে পাইকপাড়া গ্রামের বিদ্যুৎ গ্রাহকদের একাংশ নলহাটি সাব স্টেশনে ভাঙচুর চালালেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠি চালায় বলেও অভিযোগ। কিছু পরে পুলিশের লাঠিচার্জের বিরুদ্ধে এবং এলাকার ফিডার লাইনকে নলহাটি টাউন ফিডারের সঙ্গে জোড়ার দাবিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

Advertisement

রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের নলহাটি সাব স্টেশন দফতরের কর্মীরা জানান, দুপুর পৌনে দুটো নাগাদ পঞ্চাশ-ষাট জন মোটরবাইকে এসে হঠাৎই সাবস্টেশনের অপারেশন রুমে ঢুকে পড়েন। গ্রামে কেন দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ থাকবে না এ প্রশ্ন করেন তাঁরা। অবিলম্বে পাইকপাড়া গ্রামের লাইন নলহাটি ফিডারের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার দাবিও জানান। ইতিমধ্যে আরও কয়েক জন লোক অফিসে ঢুকে টেবিল-চেয়ার উল্টে ফেলে দেন। ভাঙচুর চালানো হয় অপারেশন রুমের জানালায়।

সাবস্টেশনের মধ্যে থাকা ন’টি ফিডারের লাইনও বিচ্ছিন্ন করে দেয় আন্দোলনকারীরা। এক কর্মীর মোবাইল কেড়ে আছড়ে ভেঙে দেয় আন্দোলনকারীরা। কর্তব্যরত পাঁচ, ছ’জন কর্মী বলেন, ‘‘তখন আমাদের দিশাহারা অবস্থা!’’

Advertisement

খবর পেয়ে নলহাটি থানার পুলিশ পৌঁছে আন্দোলনকারীদের সরাতে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে। আন্দোলনকারীদের দাবি, পুলিশ কোনও কিছু না শুনে বেধড়ক লাঠিচার্জ করে। আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিলে সাবস্টেশনের কর্মীরা ফের ন’টি ফিডারে লাইন চালু করেন। পুলিশ লাঠিচার্জের কথা স্বীকার করেনি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রচুর লোক জড়ো হয়েছিল। তাঁদের সামাল দিতে যা করার তাই করা হয়েছে।’’

আন্দোলনকারীরা জানান, একে গরমকাল। তার উপর রমজান মাস চলছে। প্রায় প্রতিদিন অল্পস্বল্প ঝড়বৃষ্টিও হচ্ছে। তারপরই চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। আসছে সেই গভীর রাতে। আবার ভোর হতে না হতেই ফের চলে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে দুপুরেও বিদ্যুৎ থাকছে না। এর ফলে চাষের পাম্প চালানো যাচ্ছে না। বাড়ির ইনভার্টারও চার্জ দেওয়া যাচ্ছে না। গরমে নাকাল হওয়া তো আছেই।

কেন এমন অবস্থা?

অভিযোগ, নলহাটি সাবস্টেশনের ন’টি ফিডারের মধ্যে নলহাটি টাউনের দুটি ফিডার ছাড়া গ্রামাঞ্চলের সাতটি ফিডারের এই অবস্থা। এর ফলে কুরুমগ্রাম, বড়লা, পাইকপাড়া এই তিনটি অঞ্চল-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা দীর্ঘ দিন ধরে তাতছে। স্থানীয়দের ভাঙচুর সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন অনেকে।

রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের নলহাটি গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের সহকারি বাস্তুকার অরিন্দম মুখোপাধ্যায় জানান, প্রায় দু’বছর আগে আরবান ফিডারের সঙ্গে রুরাল ফিডার আলাদা করা হয়েছে। এর ফলে পাইকপাড়া গ্রামের লাইন নলহাটি শহর থেকে আলাদা করে বর্তমানে ডিহা ফিডারের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেন, ‘‘প্রতিদিন ঝ়়ড়-জল হচ্ছে। তাতে কোথাও গাছ পড়ছে, কোথাও পোস্ট উল্টে যাচ্ছে। তার জেরে লাইন সারাতে গিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ অনেক জায়গায় বন্ধ রাখতে হচ্ছে।’’ একই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, ‘‘তবু দেখব কী ভাবে কী করা যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন