স্থায়ী সমিতি গঠনে তপ্ত এলাকা

দিনের শেষে ন’টি স্থায়ী সমিতিই তৃণমূলের দখলে গিয়েছে। জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ আর পূর্ত ও পরিবহণ— এই দুই স্থায়ী সমিতি গঠনে নির্বাচন হয়েছিল। দু’টিতেই তৃণমূল পায় ২২টি ভোট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাড়া শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪৮
Share:

পাহারা: পাড়া ব্লক অফিস চত্বরে পুলিশ। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

পঞ্চায়েত সমিতির ন’টি স্থায়ী সমিতি গঠন ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল পাড়ায়। বিজেপির অভিযোগ, পুলিশ বিনা প্ররোচনায় তাদের কর্মীদের উপরে লাঠি চালিয়েছে। জখম হয়েছেন দলের ওবিসি মোর্চার পাড়া ব্লকের নেতা শৈলেন কুইরি-সহ কয়েক জন। তবে লাঠি চালানোর অভিযোগ মানতে চায়নি পুলিশ।

Advertisement

দিনের শেষে ন’টি স্থায়ী সমিতিই তৃণমূলের দখলে গিয়েছে। জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ আর পূর্ত ও পরিবহণ— এই দুই স্থায়ী সমিতি গঠনে নির্বাচন হয়েছিল। দু’টিতেই তৃণমূল পায় ২২টি ভোট। বিজেপি কুড়িটি। ফলাফল দেখার পরে দলের সদস্যদের নিয়ে সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোর্তিময় সিং মাহাতো। পরে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘তৃণমূল প্রলোভন দেখিয়ে পুলিশকে দিয়ে সন্ত্রাস করে স্থায়ী সমিতির নির্বাচনে জিতেছে। এলাকার মানুষ সব ঘটনাই দেখেছেন। পরে তাঁরাই যোগ্য জবাব দেবেন।” অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের পাড়ার বিধায়ক উমাপদ বাউড়ি বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন সাংসদ। ওঁদের দলের তিন সদস্য স্বেচ্ছায় আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন।”

পঞ্চায়েত নির্বাচনে পাড়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজেপি জিতলেও শেষ পর্যন্ত পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গড়ে তৃণমূল। তার পরে দীর্ঘ দিন স্থায়ী সমিতি গঠন স্থগিত ছিল। সোমবার ন’টি স্থায়ী সমিতির গঠনের দিন স্থির হয়। এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ বিজেপির জয়ী সদস্যেরা হাজির হয়েছিলেন ব্লক অফিসে। বাইরে ভিড় জমিয়েছিলেন দলের কর্মী-সমর্থকেরা।

Advertisement

বিজেপির পাড়া ব্লকের নেতা বৃন্দাবন মণ্ডলের দাবি, দু’দিন আগে তাঁদের দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য শ্যামল রায়কে পুলিশ পাহারা দিয়ে ব্লক অফিসে ঢুকিয়ে দেয়। বৃন্দাবনবাবু বলেন, ‘‘আমাদের সদস্যদের ব্লকে ঢুকতে গিয়ে পরিচয়পত্র ও নির্বাচনে জেতার শংসাপত্র দেখাতে হয়েছে পুলিশকে। কিন্তু শ্যামলকে পুলিশ পাহারা দিয়ে ব্লক অফিসে ঢুকিয়েছে।”

তাঁর দাবি, ব্লকের বাইরে থাকা বিজেপির কর্মীরা ওই ঘটনার প্রতিবাদ শুরু করলেই বচসা বাধে পুলিশের সঙ্গে। বিজেপির অভিযোগ, পুরুষ পুলিশ কর্মীরা নিগ্রহ করেন তাঁদের দুই মহিলা সদস্যকে। বৃন্দাবনবাবু বলেন, ‘‘মহিলা সদস্যদের নিগ্রহ করার প্রতিবাদ করার পরেই পুলিশ বিনা প্ররোচনায় আমাদের উপরে লাঠি চালিয়েছে।”

এদিন স্থায়ী সমিতি গঠন ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা থাকায় প্রচুর পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল। পাশের কয়েকটি থানার ওসি, আইসিদের নিয়ে ব্লকে ছিলেন এসডিপিও (রঘুনাথপুর) দুর্বার বন্দ্যোপাধ্যায়, কাশীপুরের সিআই রজতকান্তি পাল। স্থায়ী সমিতি গঠন করার পরেই ওই সমিতিগুলিতে কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন হয়। স্থায়ী সমিতির সদস্যদের মধ্যেই এক জন কর্মাধ্যক্ষ হন। তাই স্থায়ী সমিতি নিজেদের দখলে রাখতে আগে থেকেই তৎপর হয়েছিল তৃণমূল ও বিজেপি। বিশেষ করে দড়দা-বহড়া পঞ্চায়েত এলাকা থেকে পঞ্চায়েত সমিতিতে জেতা বিজেপির সদস্য শ্যামলবাবু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ফলে স্থায়ী সমিতি গঠনে এগিয়ে গিয়েছিল তৃণমূল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন