Uttarakhand

উত্তরাখণ্ডের হরপা বানে নিখোঁজ পুরুলিয়ার ২, জেলাশাসকের দ্বারস্থ পরিবার

সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডে যেতে চেয়ে ২ পরিবারই দেখা করল জেলাশাসকের সঙ্গে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:১২
Share:

নিখোঁজ দুজনের ছবি হাতে জেলাশাসক। -নিজস্ব ছবি।

কথা ছিল, ছেলের প্রথম জন্মদিনের অনুষ্ঠান ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে দেখবেন। ছেলেকে আশীর্বাদ করবেন। কিন্তু রবিবার হরপা বানের পর আর ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না পুরুলিয়ার আড়শার অশ্বিনীকে। একই ভাবে খোঁজ নেই তাঁর প্রতিবেশী শুভঙ্করেরও। অত্যন্ত উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে ২ পরিবার। তাঁদের জন্য মন্দিরে পুজো দিয়েছেন পরিবার থেকে প্রতিবেশীরা, সকলেই। সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডে যেতে চেয়ে ২ পরিবারই দেখা করল জেলাশাসকের সঙ্গে।

Advertisement

আড়শার হেঁটগুগুই অঞ্চলের বাসিন্দা অশ্বিনী তন্তুবায়(৩০) এবং শুভঙ্কর তন্তুবায়(২০) প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের এক ব্যক্তিই তাঁদের উত্তরাখণ্ডে কাজ নিয়ে গিযেছিলেন। সেখানে ঋষিগঙ্গা জল প্রকল্পের অধীনে কাজ করতেন তাঁরা। করোনা অতিমারির প্রভাব কিছুটা কমলে ফের উত্তরাখণ্ডে কাজে ফিরেছিলেন ২ জনেই।

স্ত্রী বনিতা ও একমাত্র ছেলে হিমাংশুকে শ্বশুরবাড়ি ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে রেখে দিয়ে যান অশ্বিনী। শুভঙ্করেরা ৬ ভাই-বোন। ভাইদের মধ্যে শুভঙ্করই বড়। এ ছাড়াও বাড়িতে রয়েছেন তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা। তিনিই পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। সংসারের হাল ধরতে প্রায় ১৫০০ কিমি দূরে উত্তরাখণ্ডের তপোবনে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার কাজে যোগ দেন। অশ্বিনী এবং শুভঙ্কর ২ জনেই লোহার পাইপ বসানোর কাজ করতেন। কাজ শেষে রোজ এক বার কথা হত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। কখনও কখনও ভিডিয়ো কলে পরিবারের লোকেদের দেখেও নিতেন। কিন্তু রবিবারের পর আর খোঁজ নেই কারও।

Advertisement

অশ্বিনীর দাদা লক্ষ্মীকান্ত বলেন, " রবিবার দুপুর ১২টা নাগাদ ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়। সে জানায় কর্মস্থলে রয়েছে। কিন্তু টিভিতে সেখানকার দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।" একই ভাবে ফোন বন্ধ শুভঙ্করেরও।

২ বছর আগে বিয়ে হয় অশ্বিনীর। সোমবার ছিল তাঁর ছেলে হিমাংশুর প্রথম জন্মদিন। কথা ছিল, ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে ছেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠান দেখবেন। কিন্তু সেটা আর সম্ভব হল না।

তাঁদের সুস্থতা কামনা করে প্রতিবেশী এবং পরিবারের সঙ্গে যুব তৃণমূল নেতৃত্বও একাধিক মন্দিরে পুজো দেন। সম্প্রতি পুরুলিয়া জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করেন অশ্বিনীর দাদা লক্ষ্মীকান্ত এবং মামা শশধর, শুভঙ্করের দাদা রবীন্দ্রনাথ, বাবা ভজহরি-সহ কয়েক জন।

জেলাশাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ছাড়াও তাঁর কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দোপাধ্যায়। সেখানে তাঁরা জেলাশাসকের সহযোগিতার আবেদন জানান। আপনজনদের খুঁজতে উত্তরাখণ্ডে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশও করেন।

পুরুলিয়া জেলাশাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, "এই ২ পরিবারের সঙ্গে আমরা নিরন্তর যোগাযোগ রেখে যাচ্ছি। ওঁদের কাছ থেকে নিখোঁজ ২ জনের ছবি নিয়ে দিল্লিতে রেসিডেন্ট কমিশনারকে পাঠিয়েছি। পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবকেও গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন