আর্জি: শান্তিনিকেতনে নজরে পড়ছে এমনই সব ফ্লেক্স। নিজস্ব চিত্র
রাত পোহালেই এ বারের বসন্ত উৎসব। তারই প্রস্তুতিতে আশ্রম এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে একাধিক শর্ত আরোপ করল বিশ্বভারতী। পাশাপাশি প্রতিবারের মতো পলাশ-নিধন রুখতেও কড়া হলেন উৎসবের আয়োজকেরা। সমস্ত বিধি নিষেধ পালন করা হচ্ছে কিনা, তা দেখতে গোটা সময়-পর্ব জুড়েই চলসবে নজরদারি।
বসন্ত উৎসব উপলক্ষে ইতিমধ্যেই দেশবিদেশের পর্যটকে শান্তিনিকেতনে আসতে শুরু করেছেন। এলাকার হোটেল-লজ মাসখানেক আগে থেকেই ‘হাউসফুল’ হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার থেকেই শান্তিনিকেতন গমগম করছে। ভিড়ে ঠাসা আশ্রমে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তা ঠেকাতে উদ্যোগী সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই। পুলিশ-প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় পঞ্চায়েত, পুরসভা, শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের মতো একাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আগেই বৈঠক করেছে বিশ্বভারতী। বহিরাগতদের ভিড়ে আশ্রম এলাকার (বিশেষ করে কলাভবন চত্বর, যেখানে বিশিষ্ট শিল্পীদের দুর্মূল্য ভাস্কর্য রয়েছে) যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, তার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, রবিবার ভোরে বৈতালিকের পরে সাড়ে ৫টার মধ্যেই আশ্রম খালি করে দেওয়া হবে। সকালের অনুষ্ঠানের ঘণ্টাখানেক আগে আশ্রম এলাকায় সকলে প্রবেশ করতে পারবেন। সকালের অনুষ্ঠানের পর দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ফের আশ্রম এলাকা খালি করা হবে। আবার সন্ধ্যার অনুষ্ঠানের ঘণ্টাখানেক আগে আশ্রম এলাকায় প্রবেশের সুযোগ মিলবে। রাতে ‘তাসের দেশ’ নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার পরে সাড়ে ৯টা নাগাদ ফের আশ্রম এলাকা খালি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বভারতী। দিনভর আশ্রম এলাকায় উৎসবে যোগদানকারী কেউ পলাশ ব্যবহার করতে পারবেন না, তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে বিশ্বভারতী। এই মর্মে শুক্রবার থেকেই বিশ্বভারতীর অধ্যাপকসভা ও কর্মিসভার যৌথ ভাবে প্রচারও শুরু করেছে। পলাশ-নিধন রুখতে ‘গাছের ফুল, গাছে শোভা পাক’ স্লোগানে আশ্রম এলাকায় এবং লাগোয়া রাস্তাঘাটে পড়েছে একাধিক ফ্লেক্স।
বিশ্বভারতীর কর্মিসভার সম্পাদক তথা বসন্ত উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান গৌতম সাহা বলছেন, “উৎসবের দিন যাতে এলাকায় কোনও রকমের অবাঞ্ছিত ঘটনা না ঘটে, তা ঠেকাতেই অনুষ্ঠানের আগে-পরে মূল আশ্রম এলাকা খালি রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সমস্ত বিধি নিষেধ যাতে পালন করা হয়, তা দেখতে আশ্রম এলাকায় আমাদের কড়া নজরদারিও থাকবে।’’ বিশ্বভারতীর নিজস্ব নজরদারির পাশাপাশি উৎসব উপলক্ষে আশ্রম মাঠে বেশ কিছু সিসিটিভি, চারটি ওয়াচ টাওয়ার, উর্দিধারীদের পাশাপাশি সাদা পোশাকে প্রচুর পরিমাণে পুরুষ-মহিলা পুলিশ মোতায়েন থাকবে। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্ত বলেন, “সব মহলের সহযোগিতায় উৎসবের জন্য সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছি।”