ঝকঝকে: শুক্রবার সিউড়ি আদালতে। নিজস্ব চিত্র
বিচারকের সামনে চার অভিযুক্ত। প্রত্যেকের খালি পা। হঠাৎ অভিযুক্তদের দিকে নজর পড়তেই বিচারকের প্রশ্ন, ‘‘খালি পা কেন? চটি কই?’’ কাঁচুমাচু হয়ে অভিযুক্তেরা জানালেন, ‘‘আজ্ঞে, পুলিশ চটি পড়ার সুযোগই দেয়নি।’’ উষ্মা প্রকাশ করে বিচারক সরকারি আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়ে বললেন— ‘‘আগে অভিযুক্তদের চটি কিনে দিন। তার পরেই মামলা শুনব!’’ অগত্যা নির্দেশ পালন করলেন সরকারি আইনজীবী। ধৃতদের পায়ের মাপ নিয়ে পুলিশ ছুটল জুতোর দোকানে। এজলাস থেকে বেরিয়ে পুলিশি পাহারায় আদালত চত্বরেই অপেক্ষাই বসলেন ধৃতেরা। সেখান থেকে আসা নতুন সাদা হাওয়াই চটি গলিয়ে ফের এজলাসে হাজির হলেন ধৃতেরা। পায়ে নতুন চটি দেখার পরেই শুরু হল শুনানি!
শুক্রবার এমনই ঘটনা ঘটল জেলা সদর সিউড়ির বিশেষ আদালতে। যে এজলাসের বিচারক ছিলেন মহানন্দ দাস। পরে এ দিন সরকারি আইনজীবী রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাঁইথিয়া থানা এলাকায় এক নাবালিকাকে গণধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত অমর মির্ধা, সূর্য মির্ধা, কিসান মির্ধা এবং মতিলাল মির্ধা নামে চার জনকে এলাকা থেকেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এ দিন ধৃতদের প্রত্যেককে আদালতে হাজির করিয়েছিল পুলিশ। বিচারক তাঁদের খালি পা দেখেই আমাকে ওই নির্দেশ দেন। আমি নিজের টাকায় অভিযুক্তদের জন্য বাজার থেকে চার জোড়া হাওয়াই কিনে দিই।’’
আইনজীবীরা বলছেন, ব্যতিক্রমী পর্যবেক্ষণ। অন্য দিকে সাঁইথিয়া থানার পুলিশের দাবি, অভিযুক্তেরা নিজেরাই চটি পরেননি। আর দিনের শেষে ধৃতদের প্রত্যেককেই ১৪ দিনের জেল হাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক।