রাশি রাশি। নিজস্ব চিত্র
ভোর থেকে সেলাই মেশিনের ঘড়-ঘড় আওয়াজ শুরু হয়ে যাচ্ছে। কেউ মাপ মতো কাপড় কাটছেন। কয়েকজন সেলাই করে মোড়কে বন্দি করছেন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মাস্ক তৈরি করে চলেছেন পুরুলিয়ার মানবাজারের ‘গোপালনগর নিউ প্রতিভা মহিলা সঙ্ঘ বহুমুখী প্রাথমিক সমবায় সমিতি’র সদস্যারা।
গ্রামোন্নয়ন দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক সুকুমার বৈদ্য জানান, ‘স্টেট রুরাল লাইভলিহুড মিশন’ থেকে পুরুলিয়ায় ২ লক্ষ ২৪ হাজার ৫০০টি ত্রিস্তরীয় মাস্ক তৈরির নির্দেশ এসেছে। সেগুলি একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের দেওয়া হবে। জেলার স্বনির্ভর দলগুলির যে সব সঙ্ঘের মাস্ক তৈরির পরিকাঠামো ও অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাদের বরাত দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ছ’টি ব্লকের স্বনির্ভর সঙ্ঘ এই কাজ পেয়েছে। তাদের মধ্যে গোপালনগরের সঙ্ঘটি সব থেকে এগিয়ে। জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতরের সহ প্রকল্প আধিকারিক শ্যামল সেন বলেন, ‘‘পুরুলিয়ার মধ্যে গোপালনগর সঙ্ঘ সব থেকে বেশি মাস্ক তৈরি করতে পারে।’’
শ্যামলবাবু জানান, গুজরাত থেকে প্রথম দফার কাপড় এনে সঙ্ঘগুলিকে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় দফার কাপড় শীঘ্র আসছে। সুকুমারবাবু জানান, ইতিমধ্যেই বরাতের চার ভাগের এক ভাগ মাস্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে। দশ-বারো দিনের মধ্যে পুরো কাজ হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী।
ব্লক নারী উন্নয়ন আধিকারিক (মানবাজার ১) নন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গোপালনগর সঙ্ঘের পরিকাঠামো সব থেকে ভাল রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে আড়াই হাজার মাস্ক তৈরি হচ্ছে। গড়ে মাস্ক পিছু তিন টাকা করে মজুরি ধার্য্য রয়েছে।’’ বিডিও (মানবাজার ১) নীলাদ্রি সরকার জানান, ওই সঙ্ঘ আগেও মাস্ক তৈরি করে প্রশাসনকে সরবরাহ করেছে।
গোপালনগর সঙ্ঘের সদস্যা মঞ্জু কর্মকার, নয়ন কর্মকার, দোলন কর্মকার বলেন, ‘‘দিন রাত এক করে কাজ করে চলেছি। পুজোর মধ্যে করোনা যুদ্ধে শামিল হতে পেরেছি ভেবে বাড়তি উৎসাহ পাচ্ছি।’’