চক্র সক্রিয় কত দূর, জানতে জেরা

মাদক পাচারে এসে ধৃত যুবক

পুলিশের একটি অংশও মানছে, ক্রমশ মাদকে আসক্তি বাড়ছে জেলায়। তরুণ প্রজন্ম নেশার কবলে শেষ হয়ে যাচ্ছে। বাড়ছে অপরাধ। শেষ হচ্ছে মাদকাসক্তদের পরিবারও। এমন অপরাধীদের নিয়েও ফাঁপরে পড়ছেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৭ ০৭:৩০
Share:

অভিযুক্ত: আদালতের পথে। সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

মাদক পাচার করতে এসে সিআইডির হাতে ধরা পড়ল ভিন্ জেলার এক যুবক। বুধবার সিউড়ির সরকারি পলিটেকনিক কলেজের কাছাকাছি ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক ঘেঁষা একটি যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের কাছ থেকে ওই যুবককে ধরা হয়।

Advertisement

সিআইডির সিউড়ি শাখা জানিয়েছে, ধৃতের নাম জাহাঙ্গির শেখ। বছর বাইশের ওই যুবকের বাড়ি মালদহের কালিয়াচকের মোজেমপুরে। সিআইডির দাবি, ধৃতের কাছ থেকে ৩১৩ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৬ লক্ষ টাকা। নারকোটিক্স
ধারায় মামলা রুজু করে বৃহস্পতিবার ধৃতকে সিউড়ি আদালতে হাজির করায় সিআইডি। সিউড়ির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সোমেশচন্দ্র পাল ধৃতের চার দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান সরকার পক্ষের আইনজীবী তপন গোস্বামী। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবক কাকে মাদক পাচার করতে এসেছিল সেটা এখনও জানা যায়নি। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, এর আগেও বহুবার জেলায় মাদক পাচারে এসেছিল জাহাঙ্গির। ‘‘মাদক পাচারের শিকড় কতটা গভীরে সেটা জানতেই নিজেদের হেফাজতে নেওয়া হল’’— বলছেন সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসার অমরেশ মণ্ডল।

পুলিশের একটি অংশও মানছে, ক্রমশ মাদকে আসক্তি বাড়ছে জেলায়। তরুণ প্রজন্ম নেশার কবলে শেষ হয়ে যাচ্ছে। বাড়ছে অপরাধ। শেষ হচ্ছে মাদকাসক্তদের পরিবারও। এমন অপরাধীদের নিয়েও ফাঁপরে পড়ছেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। জাহাঙ্গিরের ধরা পড়ায় সেই জাল কতটা ছড়িয়েছে, সেটা অনুমান করা শক্ত নয়, জানাচ্ছেন জেলা পুলিশের একটা অংশ।

Advertisement

এত দিন ধারণা ছিল, জেলায় বেআইনি পোস্ত চাষের রমরমা কারবার চলেছে। চলতি বছরে প্রশাসনের তৎপরতায় পোস্ত চাষ বন্ধ হলেও, বিগত বছরগুলিতে মজুত থাকা পোস্তর আঠার সঙ্গে রাসায়নিক মিশিয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষ করে দুবরাজপুর ও খয়রাশোলে তৈরি হচ্ছে ব্রাউন সুগারের মতো মাদক। সেই মাদক ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন এলাকায়। কিন্তু, জাহাঙ্গির ধরা পড়া সিআইডিকে ভাবাচ্ছে। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহের ওই এলাকা মাদক কারবারের স্বর্গ রাজ্য। বিগত বছরগুলিতে জেলায় যে হারে পোস্ত চাষের রমরমা ছিল, সেই সূত্রে পোড় খাওয়া মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে জেলার, বিশেষ করে দুবরাজপুর, খয়রাশোলের পোস্ত চাষিদের। পরে যারা নিজেরাই রাসায়নিক মিশিয়ে ব্রাউনসুগার তৈরি করত বা করছে। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বিপুল পরিমাণ টাকার অঙ্কও। কিন্তু, সেই চক্র কী ভাবে চলে জাহাঙ্গিরের থেকে সেটাই জানার চেষ্টায় রয়েছে সিআইডি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন