বিতর্ক পুরুলিয়ায়

রোগীর মৃত্যুতে তদন্ত, শোকজ

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩ অক্টোবর, মঙ্গলবার বড় উরমার বাসিন্দা বছর তেইশের লব মাহাতো প্রস্রাবে জ্বালা ও বমির উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

চিকিৎসায় গাফিলতির জেরে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠল পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালের বিরুদ্ধে। শুক্রবার বলরামপুরের বড় উরমার বাসিন্দা এক যুবকের মৃত্যু হয় ওই হাসপাতালে। তার পরেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে কর্তব্যরত চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করেন রোগীর পরিজনেরা।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩ অক্টোবর, মঙ্গলবার বড় উরমার বাসিন্দা বছর তেইশের লব মাহাতো প্রস্রাবে জ্বালা ও বমির উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে লবকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। লবের দাদা পরমেশ্বর মাহাতো হাসপাতালের সুপারের কাছে দায়ের করা অভিযোগে দাবি করেছেন, বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর ভাইয়ের অবস্থা খারাপ হয়। বিষয়টি ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্সদের জানালে তাঁরা দায় ঝেড়ে ফেলে চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। যে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে লব ভর্তি ছিলেন তাঁর সঙ্গে দেখা করেন পরমেশ্বর। তাঁর দাবি, ওই চিকিৎসক ওয়ার্ডে গিয়ে তাঁর ভাইকে দেখে নার্সদের কিছু নির্দেশ দিয়ে চলে যান। তার পরেও অবস্থা উত্তরোত্তর খারাপ হতে থাকে। নার্সদের সে কথা জানালে তাঁরা কিছু করা তো দূরের কথা, উল্টে মুখ ঝামটা দেন। সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয় লবের।

খবর পেয়ে শনিবার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত ওই হাসপাতালে যান। মঙ্গলবার লব ভর্তি হওয়ার পরে শুক্রবার পর্যন্ত তাঁর কী চিকিৎসা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত নথিপত্র খুঁটিয়ে দেখেন তিনি। অনিলবাবু বলেন, ‘‘যে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে তাঁকে শোকজ করতে বলা হয়েছে। একটি তদন্ত কমিটি গড়া হবে।’’

Advertisement

অবশ্য প্রাথমিক তদন্তেই ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ওঠা কিছু অভিযোগের সত্যতা মিলেছে বলেও সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, ভর্তি হওয়ার পরে তিন দিনে লবের শুধু ম্যালেরিয়ার জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। কী ভাবে চিকিৎসা হয়েছে বা পরীক্ষা করে কী পাওয়া গিয়েছে, সেই সমস্ত তথ্য রোগীর বেড হেড টিকিটে নথিবদ্ধ করা হয়নি। এমনকী মৃত্যুর কারণও বেড হেড টিকিটে লেখা ছিল না। তদন্তে জানা গিয়েছে, রোগীর স্বাস্থ্য এবং অবস্থা সম্বন্ধে পরিজনদের যথাযথ ভাবে জানানো হয়নি। পরিজনেরা রোগীকে স্থানান্তরের কথা বললেও সেই প্রস্তাব গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয়নি।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার নয়ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের কিছু সত্যতা মিলেছে। তদন্ত কমিটি গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।’’ অভিষেক কুমার নামে যে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে লব ভর্তি ছিলেন, শনিবার তিনি বলেন, ‘‘যা বলার আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই বলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন