তৃণমূলের প্রধানের বিরুদ্ধে দলের সদস্যরাই অনাস্থা আনতে চাওয়ার তালিকায় এ বার নাম উঠল বরাবাজারের বান্দোয়ান বানজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের।
ওই পঞ্চায়েতের প্রধান ভাগ্যধর মাহাতোকে সরাতে চেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে দলের ৭ সদস্য মঙ্গলবার আবেদন জানিয়েছেন। এই পঞ্চায়েতের মোট আসন ১২। গত বছর নির্বাচনে তৃণমূল ৯টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু বছর ঘুরতেই দলের সদস্যদের অধিকাংশই প্রধানের বিরুদ্ধে কেন অনাস্থা প্রস্তাব আনলেন?
অনাস্থা চেয়ে বিডিও-র কাছে আবেদনপত্র জমা দেওয়া তৃণমূলের অন্যতম সদস্য বান্দোয়ান গ্রামের মিলন মাহাতো-র অভিযোগ, “ভাগ্যধরবাবু প্রধান হওয়ার কয়েকমাসের মধ্যেই পঞ্চায়েত পরিচালনায় স্বেচ্ছাচারিতা শুরু করেন। কোনও কাজে আমাদের মতামত নিতেন না। জানতে চাইলেও উত্তরও দিতেন না। বাকি সব সদস্যদের গুরুত্ব না দেওয়ায় বাধ্য হয়ে দলের প্রধানের বিরুদ্ধে আমরা অনাস্থা আনলাম।” তাঁর মতোই অনাস্থা আনতে চাওয়া সদস্যদের দাবি, প্রধানের এ ধরনের কাজ নিয়ে তাঁরা দলের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কর্ণপাত না করায় তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
পঞ্চায়েত প্রধান ভাগ্যধরবাবু বলেন, “সদস্যদের গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। আসলে ওরা আমার কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা নিতে চাইতেন। এ নিয়ে দলীয় নেতৃত্বকে আগেই জানিয়েছি। এখন দল যা সিদ্ধান্ত নেবে আমি তাই মেনে নেব।” তৃণমূলের বরাবাজার ব্লক নেতা সুদর্শন মাহাতো বলেন, দলীয় স্তরে আলোচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব। বিডিও অনিমেষকান্তি মান্না বলেন, “বান্দোয়ান বানজোড়া পঞ্চায়েতের ৭ তৃণমূল সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। আমি ওঁদের জানিয়েছি, পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী আগে প্রধানকে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া দরকার। প্রধান জবাব দেওয়ার পরে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।”
ইতিপূর্বে পুরুলিয়ার জঙ্গলমহল এলাকার বান্দোয়ানের কুইলাপাল, মানবাজারের ধানাড়া পঞ্চায়েতে দলের সদস্যেরা তৃণমূলের প্রধানকে সরাতে চেয়ে অনাস্থার আবেদন জানিয়েছেন। সেই তালিকা ক্রমশ লম্বা হচ্ছে। বাসিন্দাদের দাবি, একের পর এক পঞ্চায়েতে অনাস্থার জেরে আর যা কিছু হোক, উন্নয়নের কাজ কিন্তু আটকে যাচ্ছে। জনপ্রতিনিধিদের এ দিকটা দেখা দরকার।