বরাত কম জানিয়ে শ্রমিকদের একাংশকে অন্যত্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ শ্রমিকেরা কারখানার গেট বন্ধ করে আন্দোলনে নেমেছেন। ফলে উত্পাদনই বন্ধ রয়েছে পুরুলিয়ার আনাড়ার একটি রেলের স্লিপার তৈরির বেসরকারি কারখানায়।
মঙ্গলবার দিনভর তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র নেত্বত্বে অবস্থান বিক্ষোভ করেন জনা আশি শ্রমিক। ওই আন্দোলনের জেরে তাঁরা উত্পাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কারখানাটির জেনারেল ম্যানেজার জিএম গৌতম ভৌমিক। কারখানা কর্তৃপক্ষর দাবি, দক্ষিণ-পূর্ব রেলে স্লিপারের চাহিদা কম থাকায় আনাড়ায় স্লিপার তৈরির বরাত কম পাওয়া গিয়েছে। ফলে, শ্রমিকদের একাংশকে বদলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সংস্থার অন্য রাজ্যের কারখানায়। গৌতমবাবু বলেন, “গুয়াহাটিতে সংস্থার অন্য কারখানায় অনেক বেশি মাত্রায় স্লিপার উত্পাদনের বরাত আছে। আনাড়ার কারখানার মোট ২৪০ জন শ্রমিকের মধ্যে উদ্বৃত্ত জনা আশিকে সেখানে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও ওই শ্রমিকরা তা মানতে নারাজ।”
সমীর দেওঘরিয়া, অমর মাজিদের মতো আন্দোলনকারী শ্রমিকদের বক্তব্য, “দৈনিক মজুরির হিসাব ধরলে মাসে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা বেতন পাই আমরা। এত কম টাকায় রাজ্যের বাইরে থেকে সংসার চালানো সম্ভব নয় বলেই আমরা আপত্তি তুলেছি। এই অবস্থায় কারখানা কর্তৃপক্ষ চাইছেন, আমাদের আপত্তিকে ভিত্তি করে কৌশলে ছাঁটাই করতে।” এই শ্রমিকেরা আইএনটিটিইউসি-র সদস্য।
এ দিন কারখানার গেটে অবস্থান-বিক্ষোভ সামিল হয়েছিলেন ওই শ্রমিক সংগঠনের পুরুলিয়া জেলা নেতা প্রফুল্ল মাহাতো। তিনি বলেন, “কারখানা কর্তৃপক্ষকে শ্রমিকদের সমস্যাটি মানবিক দিক দিয়ে দেখতে হবে। আমরা চাইছি, কারখানায় শ্রমিকদের বদলি না করে সকলকে পর্যায়ক্রমে কাজ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।” এ বিষয়ে জেনারেল ম্যানেজার গৌতমবাবু বলেন, “শ্রমিকদের পর্যায়ক্রমে কাজ দেওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই শ্রম দফতরে শ্রমিকদের সাথে কয়েক বার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু, সব শ্রমিক এই ভাবে কাজ করতে সম্মত নন। সবাই রাজি থাকলে আমাদের পর্যায়ক্রমে কাজ করাতে কোনও আপত্তি নেই।”