দোলাডাঙায় তারে গাছের ডাল পড়ে সন্ধ্যায় বিদ্যুত্ চলে গিয়েছিল। দফতরের কর্মীরা বিদ্যুত্ বিভ্রাটের কারণ খুঁজে মেরামতি করে ফের বিদ্যুত সংযোগ দেন। কিন্তু বিদ্যুত্ আর সে রাতে ফেরেনি। এসেছিল পরের দিন বেলা ১১টায়। অন্ধকারে ডুবেছিল মামবাজার। কাকতালীয় ভাবে সেই দিন রাতেই মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালের জেনারেটর খারাপ হয়ে যাওয়ায় সারারাত রোগীদের অন্ধকারেই কাটাতে হয়। পাম্প চালু না হওয়ায় জলও ওঠেনি। বন্ধ থাকে হাসপাতালের সাফইয়ের কাজও। শৌচাগার ব্যবহার করতে গিয়ে সবাই নাকাল হন।
এ ঘটনা অবশ্য কয়েক বছর আগের। কিন্তু সমস্যা কিন্তু থেকেই গিয়েছে। মানবাজার থেকে দোলাডাঙার দূরত্ব ১৮ কিমি। বিদ্যুতের খুঁটি জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে গাছের ডাল পড়ে বিদ্যুত্ বিভ্রাটের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতা, ৪০ কিমি দূরে কোথাও বিদ্যুত্ বিভ্রাট হলে তার মাসুল গুনতে হয় মানবাজার শহরের বাসিন্দাদের। এমনটা কেন হয়? দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, প্রতিটি শহরে বিদ্যুত্ সংযোগ নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য আলাদা ফিডার থাকে। শহর এলাকায় নার্সিংহোম, হাসপাতালগুলিতে আলো ও জল সরবরাহ ব্যবস্থা অক্ষুন্ন রাখা, জরুরি পরিষেবা সংক্রান্ত দফতরের জন্য এই ব্যবস্থা রাখা হয়। মানবাজারে প্রায় অর্ধশতাব্দী পূর্বে বিদ্যুত্ ব্যবস্থা চালু হলেও এখনও আলাদা ফিডার গড়ে ওঠেনি। ফলে আশপাশে যেখানেই বিদ্যুত্ বিপর্যয় ঘটুক তার জের টানতে হয় মানবাজারকে।
রাজ্য বিদ্যুত্ বণ্টন কোম্পানির মানবাজারের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র বিজন দুয়ারি বলেন, “মানবাজারে শহর এলাকার জন্য আলাদা ফিডারের দাবি দীর্ঘদিন আগে প্রস্তাব আকারে পাঠানো হয়েছিল বলে শুনেছি। ওই প্রস্তাব কোন পর্যায়ে আছে জানি না। বড় ধরনের বিদ্যুত্ বিপর্যয় এড়াতে শহরের জন্য আলাদা ফিডার করা প্রয়োজন। এ জন্য শহরে ১১ কেভির আলাদা লাইন বসানো দরকার। কিন্তু এই মুহূর্তে বাজার এলাকায় আলাদা লাইন পাতার জন্য জায়গা পাওয়াই সমস্যা হবে।”
তবে আশার কথাও শুনিয়েছেন বিজনবাবু। তিনি জানান, দফতর সূত্রে জেনেছেন কেন্দা থানা এলাকায় আলাদা পাওয়ার স্টেশন গড়ার অনুমতি মিলেছে। খুব শীঘ্রই সেই কাজ শুরু হবে। তা হলেই মানবাজারের ওপর চাপ কিছুটা কমবে। এ ছাড়া, হুড়া থানার লধুড়কা হয়ে ৩৩ কেভির একটি লাইনের সংযোগ মানবাজারে ঢোকানো হবে বলে শোনা যাচ্ছে। আপাতত ওই ভরসায় দিন গুনছেন বাসিন্দারা।