কৃষিমেলা ও পলাশ উৎসব হয়ে গেল রঘুনাথপুর ২ ব্লক এলাকায়। বুধ ও বৃহস্পতিবার, দু’দিন ধরে সগড়কা গ্রামে মানভূম লোকসংস্কৃতি কেন্দ্রে নাবার্ডের সহায়তায় ‘সেফ’ (সাউথ এশিয়াম ফোরাম ফর এনভায়রনমেন্ট) নামের একটি সংস্থা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। বসন্ত উৎসবের আঙ্গিকে চাষের বিভিন্ন দিক লোকগানের মাধ্যমে তুলে ধরাই এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছেন সংস্থটির কর্মকর্তা দিগন্ত মুখোপাধ্যায়।
পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর ২, হুড়া ও আড়শাএই তিন ব্লকে ৫০টি ফার্মার্স ক্লাব তৈরি করেছে ওই সংস্থাটি। সেই সব ক্লাবের প্রায় পাঁচশো সদস্যে মধ্য থেকে ১৫ জনকে বেছে নিয়ে তৈরি করা হয়েছে লোকগানের একটি দল। মানভূম লোক সংস্কৃতি কেন্দ্রে এই অনুষ্ঠানে দু’দিন ধরে এই দলটিই মূলত বিভিন্ন গান পরিবেশন করেছে। দিগন্তবাবু জানান, তাঁরা চাইছেন লোকগানের মাধ্যমে সহজ সরল ভাবে চাষের বিভিন্ন দিক চাষিদের সামনে তুলে ধরতে। অনুষ্ঠানে নিজেরাই চাষ নিয়ে ছোট ছোট গান বেঁধে ঝুমুর, টুসু, বাউলের মতো জনপ্রিয় লোকগানের সুরে সেই গানগুলিকে পরিবেশন করেছে এই লোকগানের দলটি। এই দলে যেমন রয়েছেন প্রতিবন্ধী শিল্পী, তেমনিই রয়েছেন মহিলারা। দলটির অন্যতম সদস্য দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ধৃতরাষ্ট্র মাহাতো বলেন, “চাষের বিভিন্ন সুবিধা,অসুবিধার উপরে আমরাই গান বেঁধে সেগুলি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরিবেশন করি। লোকগানের সুরে এই গানগুলিতে তুলে ধরা হয় রসায়নিক সারের বদলে জৈব সার ব্যবহার করার উপকারিতা, শ্রী পদ্ধতিতে চাষ করার মতো দিকগুলি।” মানভূম লোকসংস্কৃতি কেন্দ্রের কর্মকর্তা তথা লোকগবেষক সুভাষ রায় বলেন, “প্রতি বছরই আমরা এই কেন্দ্রে বসন্ত উৎসব করি। এ বার সেই উৎসব পালিত হয়েছে কিছুটা অন্য আঙ্গিকে।” অনুষ্ঠানে দুই কৃষি লোকশিল্পী দীনবন্ধু মাহাতো ও চুড়কি কিস্কুকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
অন্য দিকে, বাঘমুণ্ডিতেও হয়েছে দু’দিনের পলাশ উৎসব। একটি সংস্থার উদ্যোগে বৃহস্পতি ও শুক্রবার গোবিন্দপুর পলাশ প্রাঙ্গণে ওই অনুষ্ঠান হয়েছে। উদ্যোক্তাদের পক্ষে সুজিতচন্দ্র কুমার জানান, সুস্থ সাংস্কৃতিক পরিবেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রঙের উৎসবকে পালন করার লক্ষ্যেই তাঁদের এই উদ্যোগ। দু’দিনে ছিল সকলে মিলে আবির খেলা, সাঁওতালি ও ছৌ নাচের মতো বেশ কিছু অনুষ্ঠান।