দুষ্কৃতীদের হাতে জখম ব্যবসায়ীকে ফেলে রেখে চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ওন্দার পুনিশোল ফাঁড়ির পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগের তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে পুলিশকর্মীদের কর্তব্যে গাফিলতির কথাই উঠে এসেছে বলেই বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সূত্রের খবর।
সোমবার রাতে ওন্দার নতুনগ্রাম থেকে কিছুটা দূরে দোকান বন্ধ করে মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হন বাঁকুড়ার প্রতাপবাগানের বাসিন্দা, পেশায় ব্যবসায়ী কার্তিক কোনার। দুষ্কৃতীদের ভোজালির আঘাতে জখম হয়েও কোনও মতে দৌড়ে পালান তিনি। পরে পুনিশোল ফাঁড়ির পুলিশকে ফোন করে ঘটনার কথা জানালে পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন। কিন্তু, ঘটনাস্থল বাঁকুড়া সদর থানার আওতায় পড়ছে জানিয়ে এবং বাঁকুড়া পুলিশকে খবর দেওয়া হবে আশ্বাস দিয়ে ওই পুলিশকর্মীরা ফিরে চলে যান বলে অভিযোগ। ফাঁড়ির পুলিশ আশ্বাস দিয়ে চলে যাওয়ার দেড় ঘণ্টা পরেও কোনও পুলিশ কার্তিকবাবুকে সাহায্যের জন্য আসেনি। অগত্যা বাড়ি থেকে ফোনে গাড়ি ডেকে বাঁকুড়ায় একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসা করান কার্তিকবাবু। রাতেই বাঁকুড়া সদর থানায় তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ ছড়ায়। মঙ্গলবার বিকেলে নতুনগ্রামের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের একাংশ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ মিছিলও করেন। বুধবার কার্তিকবাবু বাঁকুড়ার পুলিশ সুপারের দফতরে পুনিশোল ফাঁড়ির পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির লিখিত অভিযোগ করেছেন। কার্তিকবাবু বলেন, “নিজেদের এলাকা না হওয়ায় কিছু করতে পারবে না জানিয়ে জখম অবস্থায় আমাকে ফেলে রেখে চলে গেলেন পুলিশকর্মীরা। বাঁকুড়া থানার পুলিশও এল না। এই যদি পুলিশের কর্তব্যবোধ হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?” যে পুলিশকর্মীরা এই ধরনের ‘অমানবিক’ কাজ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন ওই ব্যবসায়ী। ঘটনার কথা জানতে পেরে সোমবার রাতেই তদন্তে নামে জেলা পুলিশ। বাঁকুড়ার ডিএসপি (আইনশৃঙ্খলা) বাপ্পাদিত্য ঘোষ বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে ফাঁড়ির পুলিশকর্মীদের কর্তব্যে গাফিলতি হয়েছে বলেই আমরা জানতে পেরেছি। আমি নিজে পুনিশোল ফাঁড়িতে গিয়ে সেখানকার পুলিশকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এই ঘটনার রিপোর্ট নেব।” তাঁর সংযোজন, “ঘটনাস্থলে এক জন জখম ব্যক্তিকে ফেলে দিয়ে আসাটা পুলিশের পক্ষে অনুচিত কাজ। এই ঘটনায় কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে যথযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”