চোলাই বন্ধের দাবি, বিক্ষোভ সিউড়িতে

চোলাই মদ বিক্রির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় থানায় এসে বিক্ষোভ দেখালেন আদিবাসী মহিলারা। সিউড়ির ঘটনা। মঙ্গলবার সিউড়ির ওই থানা এলাকার কামারডাঙা গ্রামের প্রায় ৩০ জন আদিবাসী মহিলা একজোট হয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি আইসিকে একটি স্মারকলিপিও দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪৭
Share:

সিউড়ি থানার সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে আদিবাসী মহিলারা। —নিজস্ব চিত্র

চোলাই মদ বিক্রির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় থানায় এসে বিক্ষোভ দেখালেন আদিবাসী মহিলারা। সিউড়ির ঘটনা। মঙ্গলবার সিউড়ির ওই থানা এলাকার কামারডাঙা গ্রামের প্রায় ৩০ জন আদিবাসী মহিলা একজোট হয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি আইসিকে একটি স্মারকলিপিও দেন।

Advertisement

বিক্ষোভে সামিল সোনামণি হাঁসদা, প্রতিমণি মুর্মু, অনিতা কিস্কু, ফুলমণি মুর্মুদের অভিযোগ, “সিউড়ি থানা ও নগরী পঞ্চায়েত এলাকায় থাকা কামারডাঙাল আদিবাসী গ্রামটিতে চোলাই মদ বিক্রির রমরমা কারবার বেশ কিছু দিন ধরেই চলছে। গ্রাম লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের দিগুলিকেঁদুলী গ্রাম থেকে গ্রামেরই বেশ কয়েকজন আদিবাসী মদ নিয়ে এসে গ্রামের চৌরাস্তার মোড়ে বিক্রি করছেন দিনরাত। এর ফলে পরিবারের পুরুষদের উপার্জনের টাকা উড়ে যাচ্ছে মদেই। অশান্তি হচ্ছে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই। অথচ এ সব বন্ধে প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।” বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাই গত ২২ সেপ্টেম্বর এবং ২৬ সেপ্টেম্বর দু’দিন গ্রামের মদ বিক্রেতাদের এ ভাবে মদ বিক্রি করতে নিষেধ করা হয়েছিল। মিলিতভাবেই প্রতিবাদ করা হয়েছিল। বিষয়টি লিখিতভবে জানানো হয়েছিল স্থানীয় পঞ্চায়েতেও। কাজ তো হয়ইনি, উল্টে কেন মদ বিক্রিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে এই রাগে গত ৮ অক্টোবর রাতে মদ বিক্রেতারা প্রতিমণির বাড়িতে চাড়াও হয়। বাড়ি ভাঙচুর করে। মারধর ও হেনস্থা করা হয় ওই আদিবাসী বধূকে। আহত ওই বধূকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। ওই রাতেই সিউড়ি থানায় থানায় চার মদ বিক্রেতার বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করা হয়। অথচ এ ব্যাপরে না পুলিশ না স্থানীয় পঞ্চায়েত কোনও পক্ষই ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের। বন্ধ হয়নি মদ বিক্রিও। তারই প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে গ্রামের আদিবাসী মহিলারা একজোট হয়ে সিউড়ি থানায় আসেন।

পুলিশ অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে, শীঘ্রই অভিযোগের খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আবগারি দফতরকে সঙ্গে নিয়ে অভিযানও চলবে। নগরীর সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুজিত মণ্ডল দাবি করেছেন, “ওই গ্রামে দু-পক্ষের ঝামেলার অভিযোগ পুজোর আগেই পেয়েছিলাম। কিন্তু পুজোর মাঝে পড়ায় দু’পক্ষকে ডাকা সম্ভব হয়নি। কিন্তু ওই অভিযোগে মদ বিক্রির উল্লেখ ছিল না। বর্তমানে ওখানে মদ বিক্রি বন্ধই রয়েছে।” তবে উপপ্রধান যাই বলুন বিক্ষোভকারীরা সে কথা মানতে নারাজ। তাঁরা ওই গ্রামের মদ বিক্রেতাদের পাশাপাশি পড়শি ঝাড়খণ্ডের দিগুলিকেঁদুলী গ্রামের দিকেও অভিযোগের আঙুল তুলছেন। কারণ, মদ ওই গ্রাম বিক্রি না হলে সেই মদ এখানে এনে বেচতে পারবেন না মদ বিক্রেতারা।

Advertisement

তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন জেলা আবগারি সুপার তপনকুমার রায়। তিনি বলছেন, “এমন অভিযোগের কথা শুনেছি। বর্তমানে জেলাশাসক ছুটিতে রয়েছেন। উনি এলেই পড়শি ঝাড়খণ্ড প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে চোলাই মদ বন্ধে যৌথ অভিযান চালানো হবে। যাতে ওখানকার বসিন্দারা সমস্যায় না পড়েন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন