জমির বাড়তি দাম দাবি, খনি বন্ধ বিক্ষোভে

বর্ধিত দরে জমির দাম-সহ নানা দাবিতে এমটার খনির রাস্তা অবরোধ করলেন গ্রামবাসী। বিক্ষোভের জেরে কয়লা তোলা বন্ধ। ফলে ডিভিসি-র মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা সরবরাহও বন্ধ। বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বড়জোড়া শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৪ ০২:৩৪
Share:

বর্ধিত দরে জমির দাম-সহ নানা দাবিতে এমটার খনির রাস্তা অবরোধ করলেন গ্রামবাসী। বিক্ষোভের জেরে কয়লা তোলা বন্ধ। ফলে ডিভিসি-র মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা সরবরাহও বন্ধ। বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Advertisement

বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় ডিভিসি-এমটা’র খনিতে সোমবার থেকে আন্দোলন শুরু করেছে ‘বাগুলি নবজাগরণ গ্রাম উন্নয়ন সমিতি।’ সদস্যদের দাবি, এক বছর আগে তাঁরা ১১ লক্ষ টাকা একর দরে এমটা’কে জমি বিক্রি করেন। কিন্তু বর্দ্ধিত বাজারদর, অর্থাৎ ১৪ লক্ষ টাকা একর দরে তাঁদের দাম দিতে হবে। সংগঠনের সম্পাদক দীপ্তি দাঁ-র দাবি, “২০১১ সালে বড়জোড়া পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে এক বৈঠকে এমটা-র কর্তারা জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সামনে প্রতিশ্রুতি দেন, অন্য খনি কর্তৃপক্ষ জমির দাম যা দেবে, এমটা আমাদের সেই দামই দেবে। অন্য খনি একর পিছু ১৪ লক্ষ টাকা দিলেও এমটা আমাদের বর্দ্ধিত দাম দেয়নি।” আরও অভিযোগ, পানীয় জলের বন্দোবস্ত, খেলার মাঠ গড়ে দেওয়ার মতো কাজও এমটা করে দেয়নি। বার বার আবেদনে কাজ না হওয়ায় তাঁরা অবস্থানে বসেছেন।

বড়জোড়ার মোলবনা, হিতুরডাঙা, লহড়াবনিতে প্রায় ৫০০ একর জমি কেনে ডিভিসি-এমটা। ডিভিসি-এমটা’র ডিরেক্টর নিমাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, জমির দাম বৃদ্ধি নিয়ে কোনও চুক্তি হয়নি। তিনি বলেন, “জমিদাতারা আগের দামে রাজি হয়েই জমি বিক্রি করেছিলেন। এখন বেশি দাম দেওয়া সম্ভব নয়।” তিনি জানান, জমিদাতাদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। জলেরও বন্দোবস্ত করা হয়েছে। প্রতি বছর জেলা প্রশাসনকে ৩০ লক্ষ টাকা এলাকা উন্নয়নের জন্য দেওয়া হয়।

Advertisement

বড়জোড়ার বিডিও ইস্তেয়াক আহমেদ খান সোমবার দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসলেও রফাসূত্র মেলেনি। তিনি বলেন, “বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশকে পরিস্থিতির উপরে কড়া নজর রাখতে বলেছি।” বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের আশ্বাস, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তিনি কথা চালাচ্ছেন। শীঘ্রই খনির উৎপাদন শুরু করা যাবে। ডিভিসি-র মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের চিফ ইঞ্জিনিয়ার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বড়জোড়ার খনি থেকে কয়লা আসা বন্ধ হওয়ায় আমাদের ভাঁড়ারে টান পড়েছে। বেশি দিন বন্ধ থাকলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।” এমটা সূত্রে খবর, ওই খনিতে কয়লা তোলা থেকে পরিবহণে কয়েকশো লোক যুক্ত। উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

মঙ্গলবার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খনির দরজার কাছে মঞ্চ তৈরি করে দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে বসে রয়েছেন কয়েকশো বাসিন্দা। মূল দরজায় পাহারায় রয়েছে সিআইএসএফ। কাছেই পুলিশের একটি গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। ভিতরে শ্রমিকদের দেখা যায়নি। খনি কর্তপক্ষের দাবি, প্রতিদিন গড়ে ৬ হাজার টন কয়লা তোলা হয়। কিন্তু ডিভিসি দাম না বাড়ানোয় খনি লোকসানে চলছিল। এমনকী খনি বন্ধ করে দেওয়ার মতো অবস্থা হবে বলেও ডিভিসিকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে বলে দাবি এক খনি-কর্তার। মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন