জলের অভাব, বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ নিয়ে প্রশ্ন কেন্দ্রের

পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে ডিভিসি-র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিটের চলতি মাসেই বাণিজ্যিক ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার কথা। কিন্তু জলের ব্যবস্থা না-হওয়ায় ওই ইউনিটটি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন আপাতত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওই প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ কাজ কেন শুরু করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রক।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৪ ০২:৪০
Share:

পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে ডিভিসি-র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিটের চলতি মাসেই বাণিজ্যিক ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার কথা। কিন্তু জলের ব্যবস্থা না-হওয়ায় ওই ইউনিটটি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন আপাতত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওই প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ কাজ কেন শুরু করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রক।

Advertisement

রঘুনাথপুরের তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের অগ্রগতি জানতে সম্প্রতি দিল্লিতে বৈঠক ডাকে বিদ্যুৎ মন্ত্রক। সংস্থার ওই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার, আধিকারিকেরা ছিলেন ওই বৈঠকে। মন্ত্রক সূত্রের খবর, সেখানেই রঘুনাথপুরে দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। বৈঠকে ডিভিসি কর্তারা জানান, রঘুনাথপুরে যখন পাইপ লাইন বসানোর কাজ শুরু হয়, তখন জমি নিয়ে কোন জট ছিল না। তাই দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ কাজে হাত দেওয়া হয়। পরে হঠাৎই কিছু জমি-মালিক বেঁকে বসেন। কিন্তু কেন্দ্রের বক্তব্য জলের ব্যবস্থা না হলে যখন কোনও ইউনিটই চালানো যাবে না, তখন নতুন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ বন্ধই রাখা উচিত।

পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে ডিভিসি-র ৬০০ মেগাওয়াট করে দু’টি ইউনিট (প্রথম পর্যায়) তৈরি হয়ে গিয়েছে। যার মধ্যে প্রথমটি পরীক্ষামূলক ভাবে চালু হওয়ার কথা ছিল ২০১০ সালে। পরের ইউনিটটি ২০১১-এ। কিন্তু নানা কারণে তা করা যায়নি। স্বাভাবিক ভাবেই এর ফলে প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পের খরচ অনেক বেড়ে গিয়েছে। এর মধ্যে আবার দ্বিতীয় পর্যায়ের (৬৬০ মেগাওয়াটের আরও দু’টি ইউনিট) নির্মাণের কাজ শুরু করা মানে আরও বেশি আর্থিক ঝুঁকি নেওয়া। জমির সমস্যা মিটিয়ে জলের স্থায়ী বন্দোবস্ত করার পরেই দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণে হাত দেওয়া উচিত ছিল বলে মনে করছে বিদ্যুৎ মন্ত্রক।

Advertisement

রঘুনাথপুর তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ডিভিসি-র পাঞ্চেত জলাধার থেকে পাইপলাইনে জল নিয়ে যাওয়ার কথা। এ জন্য প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার পাইপলাইন বসাতে হবে। কিন্তু জমি নিয়ে স্থানীয় কিছু গ্রামবাসীর আপত্তিতে মাত্র দেড় কিলোমিটার পাইপ বসানো গিয়েছে। এ দিকে মার্চ থেকে ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট চালাতে গেলেই প্রতিদিন ৬০ হাজার কিলোলিটার করে জল দরকার।

কিন্তু জলের অভাবে ইউনিটটি নাম-কা-ওয়াস্তে চালিয়েই বন্ধ রেখে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন ডিভিসি-র কর্তারা।

সমস্যা অন্য দিকেও। জমি-জটে বিদ্যুৎ উৎপাদন পিছিয়ে যেতে থাকলে প্রকল্পের খরচ বেড়ে চলবে। ফলে উৎপাদন শুরু হওয়ার পরে ইউনিট পিছু বিদ্যুতের দামও বেশি পড়বে। আর সেই দরে গ্রাহক পেতে সমস্যা হবে। রঘুনাথপুর প্রকল্প যখন শুরু হয়, তখন গোড়াতেই বিদ্যুৎ বিক্রির জন্য পাকা চুক্তির (পাওয়ার পার্চেজ এগ্রিমেন্ট) নিয়ম বাধ্যতামূলক ছিল না। তাই তা করাও হয়নি।

তাই উৎপাদন শুরু হলে গ্রাহকও খুঁজতে হবে।

পাশাপাশি এই প্রকল্পের মূল যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছে চিনের একটি সংস্থা। ইউরোয় তাদের দাম মেটাতে হয়। এক-দেড় বছরে টাকার অবমূল্যায়নে জেরে ইউরো এখন আগের চেয়ে বেশ দামি। সময় যত গড়িয়ে চলেছে, প্রকল্পের খরচও বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত জমি-সমস্যা মিটিয়ে ফেলা প্রয়োজন বলেই সংস্থা কর্তৃপক্ষ মনে করছেন।

রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় এ বছর জানুয়ারিতে রঘুনাথপুরে পাইপ লাইন বসানোর কাজ শুরু হয়। কিন্তু কিছুদিন পরেই জমি-মালিকদের একাংশ বেঁকে বসেন। তাতে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্রকে চিঠি দিয়ে সে কথা জানান ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। ডিভিসি-র এক কর্তার দাবি, রঘুনাথপুরের প্রকল্প শেষ হলে এ’টি হবে রাজ্যের সর্ববৃহৎ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। কিন্তু কেন্দ্রের নির্দেশের পরে জলের অভাবে দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ কাজ আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হবে কি না, সংস্থার পরিচালন পর্ষদ এখন সেই সিদ্ধান্ত নেবে।

তারাপীঠে পুজো দিলেন শতাব্দী রায়

পাঁচ বছর আগেও এ ভাবেই শুরু করেছিলেন। প্রচারে নামার আগে শনিবার তারাপীঠে পুজো দিতে গেলেন শতাব্দী রায়। নায়িকাকে দেখতে তখন উপচে পড়েছে ভিড়। মন্দির চত্বরে ঢোকার আগে চোখ বুজে বিড়বিড় করে খুলে ফেললেন সবুজ চটি। ১০১ টাকার পুজোর ডালি সাজিয়ে বন্দোবস্ত করাই ছিল। মিনিট পাঁচেক বাদে বেরিয়ে বীরভূম কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ তথা তৃণমূল প্রার্থী জনতার উদ্দেশে বললেন, “আপনারাই আমায় ভালবেসে নায়িকা থেকে সাংসদ করেছেন। আশা রাখি, আবার সাংসদ করবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন