টিচার-ইন-চার্জকে হুমকি, অভিযুক্ত টিএমসিপি নেতা

মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের মধ্যে তাঁরই দলের এক ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে বাঁকুড়ার একটি কলেজের টিচার ইনচার্জকে হুমকি, শাসানি দেওয়ার অভিযোগ উঠল। ইঁদপুর ব্লকের শালডিহা কলেজে বুধবার দুপুরের ঘটনা। ওই কলেজের টিচার ইনচার্জ মানিক দাস রাতে পুলিশের কাছে টিএমসিপির ইঁদপুর ব্লক সভাপতি আনন্দ পন্ডা-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে তাঁকে মারধরের হুমকি, শাসানি দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইঁদপুর শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৪ ০০:৩৪
Share:

মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের মধ্যে তাঁরই দলের এক ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে বাঁকুড়ার একটি কলেজের টিচার ইনচার্জকে হুমকি, শাসানি দেওয়ার অভিযোগ উঠল।

Advertisement

ইঁদপুর ব্লকের শালডিহা কলেজে বুধবার দুপুরের ঘটনা। ওই কলেজের টিচার ইনচার্জ মানিক দাস রাতে পুলিশের কাছে টিএমসিপির ইঁদপুর ব্লক সভাপতি আনন্দ পন্ডা-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে তাঁকে মারধরের হুমকি, শাসানি দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত টিএমসিপি নেতা অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও রাত পর্যন্ত অভিযুক্ত টিএমসিপি নেতা-সহ কাউকে গ্রেফতার করেনি।

শিক্ষাঙ্গণে একের পর এক ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করার অভিযোগ আগে অনেকবার উঠেছে। এ নিয়ে বারবার বিব্রত হয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। গত সোমবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাত্রনেতাদের এ বার সংযমী হওয়া নির্দেশ দেন। তিনি জানান, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন তখন বহিরাগতরা ঢুকতে পারবেন না। ছাত্র ভর্তি করা নিয়েও কলেজে চাপাচাপি না করতে তিনি নির্দেশ দেন। কিন্তু তার দু’দিনের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফরের মধ্যেই এই অভিযোগ ওঠায়, শিক্ষামন্ত্রীর বার্তা তাঁর দলের ছাত্রনেতাদের কাছে পৌঁচেছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।

Advertisement

ওই কলেজের টিচার ইনচার্জ মানিক দাস পুলিশে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানান। তার পরে তিনি দাবি করেন, “কিছু ছাত্রছাত্রীকে ভর্তি করানোর জন্য গত কয়েকদিন ধরেই স্থানীয় টিএমসিপি নেতা আনন্দ পন্ডা কলেজে এসে আমাকে চাপ দিচ্ছিলেন। এ দিন দুপুরে আনন্দ সঙ্গীদের নিয়ে আমার চেম্বারে ঢুকে কিছু ছাত্রছাত্রীকে ভর্তি করানো এবং কয়েকজনের ভর্তি ফি ছাড় দেওয়ার দাবিতে হম্বিতম্বি শুরু করেন। আমি তাঁর কথামতো ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করাতে অপারগ বলে জানিয়ে দেওয়ার পরেই আমাকে তেড়ে এসে মারতে উদ্যোত হন। আমাকে গালিগালাজ করেন। ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি না করা হলে আমাকে পরে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন আনন্দ পন্ডা।”

তাঁর দাবি, কলেজের সহকর্মীদের বাধাতেই এ দিন ওরা তাঁকে মারতে পারেনি। গোটা ঘটনাটি তিনি খাতড়ার মহকুমাশাসককে জানিয়েছেন। পরে তিনি ইঁদপুর থানায় আনন্দ পন্ডা সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। খাতড়ার মহকুমাশাসক তথা শালডিহা কলেজ পরিচালন সমিতির সহ-সভাপতি শুভেন্দু বসু বলেন, “টিচার ইনচার্জ লিখিত ভাবে একটা অভিযোগ করেছেন। ঘটনাটি দেখা হচ্ছে।”

শালডিহা কলেজের ছাত্র সংসদ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দখলে। অভিযুক্ত টিএমসিপি নেতা আনন্দ পন্ডা ওই কলেজে পড়াশোনা করেন না। তিনি দাবি করেছেন, “এলাকার কিছু দুঃস্থ ছাত্রছাত্রী টাকার অভাবে কলেজে ভর্তি পারেননি। তাই ভর্তি ফি-তে কিছুটা ছাড় দিয়ে তাঁদের কলেজে ভর্তির জন্য গত কয়েকদিন ধরেই আমরা টিচার ইনচার্জের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলাম। তবে এ দিন আমি কলেজে যাইনি। তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন।”

টিএমসিপি-র বাঁকুড়া জেলা চেয়ারম্যান শেখ হামিদ বলেন, “ইঁদপুর এলাকার বহু ছাত্রছাত্রী এখনও কলেজে ভর্তি হতে পারেননি। ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থেই আমাদের সংগঠনের ব্লক সভাপতি আনন্দ পন্ডা-সহ স্থানীয় নেতৃত্ব সরব হয়েছেন। টিচার ইনচার্জ এটা নিয়ে অনর্থক রাজনীতি করছেন।” তাঁর দাবি, ওই টিচার ইনচার্জকে কেউ হুমকি, শাসানি কিছুই দেয়নি। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন