তারাপীঠের পথে দুর্ঘটনায় মৃত দুই

বন্ধুর গাড়িতে চেপে তারাপীঠে পুজো দিতে যাচ্ছিলেন এলাকার আট যুবক। রাস্তায় ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল চালক-সহ দু’জনের। গুরুতর আহত হলেন ওই গাড়ির আরোহী ছ’জন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দুর্ঘটনাটি ঘটে বড়জোড়া থানার শালগাড়া মোড়ের কাছে, বাঁকুড়া-দুর্গাপুর ৯ নম্বর রাজ্য সড়কে। মৃত ও আহতেরা সকলেই পাত্রসায়র থানার বালসি গ্রামের বাসিন্দা। শুক্রবার সকালে এই দুর্ঘটনার খবর জানাজানি হতেই বালসি এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বড়জোড়া ও পাত্রসায়র শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:৫৩
Share:

বড়জোড়ায় দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই গাড়ি। —নিজস্ব চিত্র

বন্ধুর গাড়িতে চেপে তারাপীঠে পুজো দিতে যাচ্ছিলেন এলাকার আট যুবক। রাস্তায় ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল চালক-সহ দু’জনের। গুরুতর আহত হলেন ওই গাড়ির আরোহী ছ’জন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দুর্ঘটনাটি ঘটে বড়জোড়া থানার শালগাড়া মোড়ের কাছে, বাঁকুড়া-দুর্গাপুর ৯ নম্বর রাজ্য সড়কে। মৃত ও আহতেরা সকলেই পাত্রসায়র থানার বালসি গ্রামের বাসিন্দা। শুক্রবার সকালে এই দুর্ঘটনার খবর জানাজানি হতেই বালসি এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন দাশরথী দাস অধিকারী (৩৫) ও তরুণ ঘোষ (৩৬)। বালসির পূর্বপাড়ায় বাসিন্দা দাশরথী ছিলেন ওই গাড়ির চালক। পেশায় ব্যবসায়ী তরুণবাবুর বাড়ি বালসির পশ্চিমপাড়ায়। দুর্ঘটনার পরে কিচ্ছুক্ষণের জন্য ওই রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হয়। খবর পেয়ে বড়জোড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আরোহীদের উদ্ধার কাজ শুরু করে। ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয়। আহত ছ’জনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বড়জোড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। রাতেই সেখান থেকে তাঁদের বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে এ দিন দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, দ্রুত গতিতে যাওয়ার সময় ওই গাড়িটির সঙ্গে ট্রাকটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। চালক পলাতক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে বালসি এলাকার বাসিন্দা গুরুপদ মণ্ডলের গাড়িতে করে তারাপীঠে যাচ্ছিলেন তাঁর বন্ধুরা। গুরুপদবাবু ওই গাড়িতেই ছিলেন। রাত ১২টা নাগাদ বড়জোড়ার শালগাড়া মোড়ের কাছে বড়জোড়ামুখী একটি ট্রাকের সঙ্গে ওই গাড়িটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। গাড়িটির সামনের অংশ দুমড়ে যায়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, দ্রুতগতিতে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারানোর ফলে এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।

Advertisement

দুর্ঘটনার খবর রাতেই পৌঁছে গিয়েছিল বালসি গ্রামে। এ দিন সকাল থেকে গ্রামজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। এলাকার বাসিন্দা কল্যাণ কোঙার, মৃত দাশরথীর দাদা হারাধন অধিকারী ও তরুণের কাকা ফুলসুন্দর ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে এ দিন বড়জোড়া থানায় যান। সেখান থেকে বাঁকুড়ায় যান মৃত ও আহতদের আত্মীয়েরা। কল্যাণবাবু বলেন, “ওরা বন্ধুরা তারাপীঠে যাচ্ছিল। গাড়ির মালিক গুরুপদও সঙ্গে ছিলেন। বেড়াতে যাওয়ার পথে এতবড় দুর্ঘটনা কী করে ঘটল তা ভেবে পাচ্ছি না।” বালসির বাল্লেশ্বরতলায় একটি মিষ্টির দোকান রয়েছে তরুণের। তাঁর কাকা ফুলসুন্দর ঘোষের আক্ষেপ, “কত আনন্দ করে ওরা তারাপীঠ যাচ্ছিল। মাঝ রাস্তায় এমন বিপদ অপেক্ষা করছিল কে জানত?” রাতবিরেতে এলাকার কেউ আপদে বিপদে পড়লে এক ডাকেই গাড়ি নিয়ে হাজির হয়ে যেতেন দাশরথী। গাড়িচালক হিসাবে সকলের প্রিয় এই যুবকের দাদা হারাধন দাস অধিকারী বলেন, “গাড়ি চালানোটা ছিল ওর নেশা। সেটাই পরে ওর পেশা হয়। গাড়িতেই ভাইয়ের মৃত্যু হল!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন